শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাতক্ষীরায় তোপের মুখে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরায় তোপের মুখে পড়েছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক। আন্দোলনরত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুই ঘণ্টা বৈঠকের পরও তাদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন তার নেতৃত্বাধীন ঊর্ধ্বতন একটি দল। শিক্ষার্থীরা তাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালসহ ক্লিনিক্যাল শ্রেণিকক্ষ চালু না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস বর্জন ধর্মঘট কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। ৫০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল চালুর দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে গতকাল ষষ্ঠ দিনের মতো অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলে।

শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকালে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হকের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল বিভাগের একটি টিম সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছলে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের তোপের মুখে পড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন- ‘এক দফা এক দাবি, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কবে দিবি’। ‘রক্ত চাইলে রক্ত দেব, মেডিকেল চালু কর’। ‘মিথ্যা আশ্বাসে লাভ নাই, হাসপাতাল চালু চাই’ প্রভৃতি। শিক্ষার্থীদের মুহুর্মুহু স্লোগানে কলেজ ক্যাম্পাস প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এরই একপর্যায়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হকের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেলের অ্যাডুকেশন বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ডা. আবদুর রশিদ, বিএমএ সভাপতি ডা. আজিজুর রহমান, স্বাচিপের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোখলেসুর রহমানসহ মেডিকেল টিমের সদস্যরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। তারা সমস্যা সমাধানের জন্য আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়ার প্রতি সংহতি জানিয়ে সংলাপের প্রস্তাব দিলে তালা খুলে দেওয়া হয়। পরে সমস্যা সমাধানের জন্য অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সাবেক মন্ত্রী ডা. রুহুল হক, জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল অ্যাডুকেশনের পরিচালক প্রফেসর ডা. আবদুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কাজী তবিবুর রহমান, বিএমএ সভাপতি ডা. আজিজুর রহমান, স্বাচিপ সভাপতি ডা. মোখলেসুর রহমানসহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডা. রুহুল হকসহ কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গভাবে চালু, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য দ্রুত একটি বাস প্রদান এবং এক সপ্তাহের মধ্যে সাতজন শিক্ষক মেডিকেল কলেজে পদায়নের বিষয়ে জানানো হয়। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ৫০০ শয্যা চালুর বিষয়ে অনড় থাকার কথা জানিয়ে দেন। ডা. রুহুল হক শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন থেকে সরে আসেননি। পরে বেলা ২টার দিকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হকসহ নেতারা কলেজ ছেড়ে চলে যান।

সর্বশেষ খবর