শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
‘ডাকাত সাজিয়ে’ কিশোর হত্যা

অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ‘ডাকাত সাজিয়ে’ কিশোর শামছুদ্দিন মিলনকে (১৬) পিটিয়ে হত্যা মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জেলার দুই নম্বর আমলি আদালতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফারজানা ভূঁইয়া গতকাল এ আদেশ দেন। আদেশে সিআইডিকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী কল্পনা রানী দাস জানান, আদালত বাদী শামছুদ্দিন মিলনের মা কোহিনুর বেগম ও তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি-ডিবি) আতাউর রহমানের বক্তব্য শোনার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। কল্পনা রানী বলেন, ‘এখন থেকে এ মামলার বাদীকে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। আমরা চাই মিলনের মতো একজন নিরপরাধ কিশোর হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।’ একই সময় আদালত প্রাঙ্গণে মামলার বাদী মিলনের মা জানান, তিনি চার বছর ধরে বিচারের জন্য আদালতে ঘোরাঘুরি করছেন। এখন আদালত যা করেন সে বিষয়ে তার কিছু বলার নেই।

২০১১ সালের ২৭ জুলাই কোম্পানীগঞ্জের চর কাঁকড়া ইউনিয়নের কিশোর মিলনকে পুলিশ গাড়িতে করে এনে উন্মুত্ত জনতার হাতে ছেড়ে দেয়। সেখানে পুলিশের উপস্থিতিতেই গণপিটুনিতে তার মৃত্যু হয়। পুলিশের গাড়ি থেকে তাকে নামিয়ে দেওয়াসহ পুরো ঘটনার ভিডিওচিত্র প্রকাশিত হলে বিষয়টি সারা দেশের মানুষের হৃদয়ে নাড়া দেয়। এ ঘটনায় ওই বছরের ৩ আগস্ট মিলনের মা কোহিনুর বেগম নোয়াখালীর দুই নম্বর আমলি আদালতে পিটিশন মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে একই বছরের ৮ আগস্ট কোম্পানীগঞ্জ থানা এটিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করে। চার বছরে ৫২ বার সময় নিয়ে গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি আতাউর রহমান। এতে বাদীর মামলা না চালানোর আবেদনের বরাত রয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, এজাহারে বর্ণিত ঘটনা সত্য বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলেও কে বা কারা উক্ত ঘটনা ঘটিয়েছে তা প্রমাণ করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এর আগে এ মামলায় ধারণকৃত ভিডিওচিত্র দেখে গণপিটুনিতে অংশ নেওয়া ২৬ আসামিকে শনাক্ত করে পুলিশ। যাদের মধ্যে পাঁচজনকে আটকের পর দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কোম্পানীগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, এক উপ-পরিদর্শক ও দুই কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। অভিযুক্তরা বর্তমানে নোয়াখালীসহ বিভিন্ন থানায় কর্মরত আছেন।

সর্বশেষ খবর