শিরোনাম
শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

যৌতুকের আগুনে পুড়ল নাসিমার জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

যৌতুকের আগুনে পুড়ল নাসিমার জীবন

যৌতুকের আগুন পুড়ল নাসিমার জীবন। যৌতুক দিতে না পারায় স্ত্রী নাসিমার (২৩) গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন স্বামী রুবেল হোসেন। তারপর চার দিন সীমাহীন যন্ত্রণা ভোগ করে গতকাল চিরবিদায় নিয়েছেন দগ্ধ নাসিমা। মৃত্যুর আগে স্বামীর বিরুদ্ধে গায়ে আগুন দেওয়ার ওই  অভিযোগ করে গেছেন তিনি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা আগেই বলেছিলেন, নাসিমার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এ অবস্থায় গতকাল সকাল ৬টার দিকে নাসিমা মারা গেছেন। যৌতুকের জন্য স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগে রুবেল হোসেনের (৩০) বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় মামলা হয়েছে। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার কুণ্ডুগ্রামে তার বাড়ি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ভূইয়া জানান, মৃত্যুর আগে নাসিমার জবানবন্দি তিনি রেকর্ড করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে স্বামীই নাসিমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়েছেন। রুবেল এখন পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান চলছে।

 নাসিমা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের ১০ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। আগুনে তার শরীরের ৮২ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। নাসিমার বাবা আবদুল গাফফারের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার গাদোঘাট গ্রামে। স্বামীর বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়ির দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। গতকাল দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে নাসিমার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতাল মর্গের সামনে নাসিমার বাবা আবদুল গাফফারের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, নাসিমা তার একমাত্র সন্তান। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। জামাই হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক। একপর্যায়ে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে তিনি মসজিদের ইমামতি শুরু করেন। চার-পাঁচ মাস আগে তা বাদ দিয়ে নওগাঁ সদরে তিনি প্লাস্টিক সামগ্রীর দোকান দেন। এ জন্য তিনি (নাসিমার বাবা) দুই লাখ টাকা দিয়েছেন। এর আগেও দুই দফায় ৭০ হাজার টাকা দিয়েছেন। একমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে শাশুড়ি তাকে টাকা দিতেন। নওগাঁয় দোকান করার পর তারা একটি বাসা ভাড়া করে থাকতেন। এবার জামাইয়ের দাবি ছিল আরও ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। টাকা না পেয়ে গত ২৪ অক্টোবর রাতে তিনি নাসিমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।

সর্বশেষ খবর