শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ধরা পড়েননি ঘরোয়ার মালিক সোহেল

আলী আজম

ধরা পড়েননি ঘরোয়ার মালিক সোহেল

রাজধানীর মতিঝিলের ঘরোয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক আরিফুল ইসলাম সোহেলকে ধরতে পারেনি পুলিশ। ইতিমধ্যে তাকে ধরতে সম্ভাব্য একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু ১৮ দিনেও কোনো ফল আসেনি। এমনকি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তল ও পাজেরো গাড়িটিও জব্দ হয়নি। যদিও সোহেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ডিএমপি।

রিয়াদ হত্যাকাণ্ডের ১৮ দিনেও খুনি সোহেল গ্রেফতার না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে নিহতের পরিবার। এমনকি তারা পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। পুলিশ আসলে রিয়াদের খুনি সোহেলকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে বলে তাদের সন্দেহ। তারা খুনি সোহেলকে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার আইনে বিচারের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ওয়ারী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আলিম হোসেন শিকদার বলেন, সোহেল দেশেই আছেন। তিনি বার বার অবস্থান পরিবর্তন করছেন। তাকে ধরতে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও অভিযান চালাচ্ছে। সোহেলের অবস্থান শনাক্ত করতে বিভিন্ন প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই তাকে ধরা সম্ভব হবে। এ ছাড়া হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল ও গাড়ি জব্দের চেষ্টা চলছে। মামলার অন্য আসামি ম্যাসিয়ার খবিরকেও ধরতে অভিযান চলছে। তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, রিয়াদ খুনের এজাহারভুক্ত আসামি জসিম উদ্দিনকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। তিনি ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়ে জেলহাজতে আছেন। ইতিমধ্যে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ২১ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ১ নভেম্বর আদালতে হোটেলটি সিলগালার অনুমতি চেয়েছিলাম। আদালত ৩ নভেম্বর হোটেলটি সিলগালা করার অনুমতি দেন। ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ হয়েছে। আদেশ পেলেই তা কার্যকর করা হবে। পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, মামলার যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের কাজ শেষ। এখন কেবল সোহেলকে গ্রেফতার করে অস্ত্র উদ্ধার করতে পারলেই তদন্ত শেষ হবে। হোটেল সিলগালার ব্যাপারে তিনি বলেন, হোটেলটি তালাবদ্ধ আছে। আদেশ হাতে পেলে হোটেলের তালা খোলা হবে। সেখানে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ জব্দ করা হবে। এরপর হোটেলটি সিলগালা করে দেওয়া হবে। নিহতের ভাই রিপন জানান, আমি ঢাকার একটি হোটেলে কাজ করি। কিন্তু রিয়াদ খুনের পর থেকে আমি গ্রামের বাড়িতেই আছি। ভয় হচ্ছে ঢাকায় গেলে আমাকেও হত্যা করা হতে পারে। খুব কষ্টে চলছে আমাদের সংসার।

প্রসঙ্গত, ২৭ অক্টোবর রাতে চুরির অভিযোগে ঘরোয়া হোটেলের মালিক সোহেল তার কর্মচারী রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ছিনতাইকারীর গুলিতে রিয়াদ নিহত হয়েছে বলে ফিল্মি গল্প তৈরি করেন সোহেল। ২৮ অক্টোবর নিহতের ভাই রিপন বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় হোটেল মালিক সোহেল, দুই কর্মচারী জসিম উদ্দিন ও ম্যাসিয়ার খবিরকে আসামি করা হয়।

নিহত রিয়াদ স্বামীবাগের ৭৩ নম্বর মিতালী স্কুল গলির একটি নির্মাণাধীন বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকত। তার বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়াইন গ্রামে। নিহতের মা রোকেয়া বেগম ও ভাই রিপন ছাড়া পরিবারে আর কেউ নেই।

সর্বশেষ খবর