রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা

প্রতিদিন ডেস্ক

এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা সবখানেই চরম ভীতিকর অবস্থা। যুদ্ধের দামামা সবখানেই। এ অবস্থায় পুরো সভ্যতাই হুমকির মুখে পড়েছে। দেশে দেশে চলছে বোমা হামলা। বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়। কিছু দিন ধরেই মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে সংস্কৃতি ও ফ্যাশনের ‘রাজধানী’ প্যারিস কেঁপে উঠছে ভয়ঙ্কর সব জঙ্গি হামলায়। হুমকি দেওয়া হচ্ছে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের। হুমকি থেকে বাদ পড়ছে না মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউসও। দেশে দেশেও চলছে হুমকি-ধমকি। দক্ষিণ চীন সাগরে একটি দ্বীপের মালিকানা নিয়ে মুখোমুখি দুই পরাক্রমশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সমর্থন করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার মনকষাকষি। এর মধ্যে গতকাল জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ফোরাম নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে আইএসকে ধ্বংসের একটি খসড়া। সিরিয়া, ইরাক বা পৃথিবীর যেখানেই হোক, ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের নির্মূলে একমত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। পরিষদের সদস্যরা জানিয়েছে, প্যারিস হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রস্তাব গ্রহণ করাটা জরুরি হয়ে পড়েছিল। এদিকে প্যারিসে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার রেশ শেষ না হতেই গত পরশু মালির রাজধানী বামাকোতে একটি অভিজাত হোটেলে হানা দেয় জঙ্গিরা। তারা জিম্মি করে অন্তত ১৭০ জনকে। পরে তাদের উদ্ধার করতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী, ফ্রান্সের বিশেষ বাহিনী ও দেশটির কমান্ডোরা রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে। তাতে প্রাণ হারায় অন্তত ২১ জন। এ অবস্থায় গতকাল সন্ত্রাসী হামলার সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে ফ্রান্সের পাশের দেশ আলজেরিয়ায়। পুরো দেশটিকে মুড়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। এদিকে গতকালই সিরিয়ায় আইএসের অনেক আস্তানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কাস্পিয়ান সাগর থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ অবস্থা আর কিছু দিন চলতে থাকলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। আর তা হলে এ পৃথিবীর অস্তিত্ব থাকবে মিনিট দশেক।

আইএস নিশ্চিহ্নে জাতিসংঘের সম্মতি : মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে ‘প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা’ নিতে সম্মতি দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এ লক্ষ্যে সংস্থাটি সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। প্যারিসে হামলার পর সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে বেলজিয়াম। যে কোনো সময় আইএসের হামলার আশঙ্কায় আছে দেশটি। এমন অবস্থায় নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম সদস্য রাষ্ট্র ফ্রান্স প্রস্তাবটি আনে। এতে সম্মতি দেয় বাকি রাষ্ট্রগুলো। সর্বসম্মতিতে গৃহীত জাতিসংঘের ২২৪৯ নম্বর প্রস্তাবে তিউনিসিয়া ও তুরস্কে জঙ্গি হানাদারিরও তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।

ব্রাসেলসে সর্বোচ্চ সতর্কতা, বন্ধ মেট্রোরেল : প্যারিস স্টাইলে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে গতকাল সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সতর্কতায় ‘অত্যন্ত সাংঘাতিক’ ও ‘অত্যাসন্ন’ সন্ত্রাসী হামলার হুমকির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রাজধানী ছাড়াও দেশজুড়ে নিম্নমাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ব্রাসেলস কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আজ রবিবার পর্যন্ত রাজধানীতে মেট্রোরেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর বাসিন্দাদের ভিড়, বিশেষ করে বিপণি কেন্দ্র ও কনসার্ট এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মালিতে ১০ দিনের জরুরি অবস্থা : মালির রাজধানী বামাকোয় বন্দুকধারীদের হামলায় ২১ জন নিহতের পর গতকাল সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আগামী ১০ দিনের জন্য এ জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকবে। দেশটির উত্তরাঞ্চলের গোলযোগপূর্ণ এলাকার আল-কায়েদার একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। হতাহতের ঘটনায় তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এএফপি, বিবিসি।

সর্বশেষ খবর