মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বেনাপোলে বৈধ পথে অবৈধ কারবার

সাইফুল ইসলাম, যশোর

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে থানকাপড় আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক নির্ধারণ হয় কেজিতে। কিন্তু শাড়ি ও ওড়নার ক্ষেত্রে শুল্ক নির্ধারণ হয় পিস হিসেবে। এক কেজি থানকাপড়ের শুল্ক আড়াই মার্কিন ডলার। কিন্তু কোয়ালিটিভেদে প্রতি পিস শাড়ির শুল্ক পাঁচ থেকে সাত ডলার পর্যন্ত। আমদানিকৃত একটা শাড়ি শুল্ক বিভাগে ‘কোনোভাবে’ থান কাপড় হিসেবে দেখাতে পারলেই শুল্ক ফাঁকি দেওয়া যায় অর্ধেকেরও বেশি। এভাবে একেক চালানেই কোটি টাকারও বেশি শুল্ক ফাঁকি দেওয়া সম্ভব। সীমান্তে দায়িত্বরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, এভাবে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। বিজিবির তৎপরতায় এমন কিছু চালান ধরাও পড়েছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেনাপোলের তিনটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স এরই মধ্যে বাতিল করেছে। কিন্তু মঙ্গলবার আবারও বেনাপোল থেকে এ রকম একটি চালান (এক ট্রাক, ১৫১ প্যাকেট) আটক করে বিজিবি। কাগজপত্রে ঘোষণা দেওয়া, ট্রাকে থানকাপড় রয়েছে। কিন্তু সেখানে ছিল দামি ভারতীয় শাড়ি, ওড়না ও থ্রিপিস। গতকাল দুপুরে যশোর শহরের ঝুমঝুমপুরে বিজিবির ২৬ ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে ওই সব শাড়ি, ওড়না ও থ্রিপিস প্রদর্শন করা হয়। এ সময় সেখানে বিজিবির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফরিদ হাসান, খুলনার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল খলিলুর রহমান, ২৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার এই প্রবণতা বন্ধ করতে হলে আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, শুল্ক বিভাগ, কাস্টমস, বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট সব ডিপার্টমেন্টকে আরও সতর্ক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা দরকার। এ ক্ষেত্রে মিডিয়ারও ভূমিকা রয়েছে বলে তারা মনে করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিজিবির ২৬ ব্যাটালিয়নের অধীনে রয়েছে যশোর ও ঝিনাইদহের ১১১ কিলোমিটার সীমান্ত। গত এক বছরে এই সীমান্ত এলাকা থেকে ২০০ কোটি টাকারও বেশি দামের চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে এ ব্যাটালিয়ন। ওই সময় চোরাকারবারির অভিযোগে আটক করা হয় ১৩৬ জনকে।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফরিদ হাসান বলেন, চোরাচালান প্রতিরোধের পাশাপাশি বিজিবি সীমান্ত এলাকায় নারী-পুরুষদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন, স্কুলের মাঠ সংস্কার করে শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করাসহ নানা জনহিতকর কাজ করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে বিজিবির সঙ্গে সীমান্ত এলাকার মানুষের ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠছে। চোরাচালান বন্ধে তারা বিজিবিকে সহযোগিতাও করছেন।

সর্বশেষ খবর