মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হরতাল ডেকে মাঠে নেই জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক

হরতাল ডেকে মাঠে নেই জামায়াত

জামায়াতের ডাকা হরতালেও গতকাল রাজধানীর তোপখানা রোডে ছিল অসহনীয় যানজট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে দলটির ডাকা গতকালের সকাল-সন্ধ্যা হরতালে রাজধানীসহ দেশের কোথাও সাড়া মেলেনি। হরতালে জীবনযাত্রা ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। নিত্যদিনের মতো চলেছে ব্যক্তিগত ও গণপরিবহন। হরতাল ডেকে জামায়াতও মাঠে ছিল না। এদিন রাজধানীর প্রতিটি রুটে দেখা গেছে যানজট। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল খোলা। হরতালের পক্ষে জামায়াত-শিবির মাঠে না থাকলেও বিরোধীরা ছিল সোচ্চার। প্রতিটি মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা অলস সময় কাটিয়েছেন। একই চিত্র ছিল চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভাগীয় ও বড় জেলা শহরগুলোতেও। ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষাও এদিন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রাজধানীর মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, কালশী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন ও মতিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নাশকতা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে ছিল। আবদুল্লাহপুর, রাজক্ষী, জসীমউদ্দীন, এয়ারপোর্ট, খিলক্ষেত, বিশ্বরোড, রেডিসন, গুলশান, বনানী এলাকার জনজীবনও ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। গণপরিবহন অন্যদিনের মতোই চলেছে। ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল ছিল স্বাভাবিক। অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নগরীর বড় বড় বিপণিবিতান, পোশাকশিল্পসহ সব ধরনের শিল্প কারখানা চলেছে স্বাভাবিকভাবে। দিনের প্রথম প্রহর থেকেই রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলো থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়।

বিভিন্ন স্থান থেকে পাঠানো আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের সংবাদ :

বগুড়া : বগুড়ায় জামায়াতের ডাকা হরতালে জনজীবন স্বাভাবিক ছিল। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শহরে সকাল থেকেই অটোরিকশা, সিএনজি এবং বিভিন্ন রুটে যানবাহন চলাচল করেছে। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, ব্যাংক-বীমা খোলা ছিল।

মেহেরপুর : সকাল-সন্ধ্যা হরতালে মেহেরপুরে জামায়াতের কোনো নেতা-কর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি। সকাল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে জেলার সব রুটে যানবাহন চলাচল করেছে। খোলা ছিল সব দোকানপাট।

বরিশাল : জামায়াতের ডাকা হরতালে বরিশালে কোনো প্রভাব পড়েনি। নগরী কিংবা নগরীর বাইরে কোনো পিকেটিং বা মিছিল হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। প্রতিদিনের মতো সকাল থেকেই অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল ছিল স্বাভাবিক। স্বাভাবিক ছিল অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল। ব্যাংক-বীমা, অফিস-আদালত, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কার্যক্রম ছিল স্বাভাবিক।

রংপুর : জামায়াতের ডাকা হরতালে রংপুরে মাঠে দেখা মেলেনি দলটির নেতা-কর্মীদের। দলীয় কার‌্যালয়েও ছিল তালা ঝোলানো। জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। দোকানপাট, অফিস-প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল, যানবাহন চলাচলও ছিল স্বাভাবিক।

নাটোর : নাটোরে জামায়াতের ডাকা হরতাল ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। মহাসড়কগুলোতে দূরপাল্লার যান চলাচল করতে দেখা যায়নি। বাকি সব চলেছে স্বাভাবিক দিনের মতোই।

ঝিনাইদহ : হরতালের পক্ষে ঝিনাইদহে মাঠে ছিল না জামায়াত। জীবনযাত্রাও ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। শহরের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমাসহ সব প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। সকাল থেকেই ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করেছে। অভ্যন্তরীণ রুটসহ দূরপাল্লার সব রুটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। কোথাও কোনো অপ্রীতিকার ঘটনা ঘটেনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : জামায়াত আহূত সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কোনো প্রভাব পড়েনি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। দোকানপাট খোলা ছিল, স্থানীয় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি ও লোড-আনলোড স্বাভাবিক ছিল। হরতালের সমর্থনে জামায়াত মিছিল পর্যন্ত করেনি।

সাতক্ষীরা : হরতালের কোনো প্রভাব পড়েনি সাতক্ষীরায়। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলেছে। হরতালের সমর্থনে কোনো পিকেটিংও হয়নি।

খুলনা : জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালের পক্ষে খুলনায় কোনো পিকেটিং হয়নি। ভোর থেকেই স্বাভাবিক ছিল জনজীবন। নগরীতে পর‌্যাপ্ত যানবাহন চলাচল করেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও অন্যান্য দিনের মতো সরব ছিল। তবে দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ ছিল।

সিলেট : মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকা হরতাল সিলেটে ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। নগরীর কোথাও মিছিল-পিকেটিং করতে দেখা যায়নি জামায়াত-শিবিরকে। তবে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে দিনভর হরতালবিরোধী মিছিল-সমাবেশ করতে দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর