মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

দিনভর নাটকীয়তার পর তফসিল, ৩০ ডিসেম্বর ভোট

গোলাম রাব্বানী

পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল নিয়ে দিনভর নাটকীয়তা চলে নির্বাচন কমিশনে। দফায় দফায় বৈঠক করে তফসিল দেওয়ার প্রস্তুতির কাজ শেষ করে নির্বাচন কমিশন। এ জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে রাতেই নির্বাচনী বিধিমালা ও আচরণবিধি ভেটিং করে আনা হয় সন্ধ্যায়। রাতেই মন্ত্রণালয় থেকে এসআরও নম্বর নিয়ে গেজেটও জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। সারা দিন বিধির অপেক্ষায় থেকে সর্বশেষ সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনাররা জরুরি সভায় বসে তফসিলের সিদ্ধান্ত নেন। তবে ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ রাখা হয় ৩০ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র ছাপানোর কাজও শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ বিজি প্রেস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

জানা গেছে, ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময়, যাচাই-বাছাইর জন্য এক দিন, আপিল-নিষ্পত্তির জন্য এক দিন, ১৩ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দ ১ দিন বাকি দিনগুলো প্রচারণার জন্য সময় পাবেন প্রার্থীরা।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভোটের তারিখ নির্ধারণে সিইসি, আমি ও নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজসহ আমরা তিনজন  ৩০ ডিসেম্বর ভোটের বিষয়ে একমত হয়েছি। কাল (আজ) দুপুরে সিইসি আনুষ্ঠানিকভাবে দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন।

এদিকে ইসিতে গতকাল সকাল থেকেই পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সব ফাইল নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশনাররা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানান, আইন মন্ত্রণালয়কে বার বার তাগাদা দিয়ে বিধিমালার ভেটিং শেষ করে সন্ধ্যায় কমিশনে আনা হয়। একাধিক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেছেন, আজ মঙ্গলবার তফসিল ঘোষণা করতে না পারলে ডিসেম্বরে আর ভোটগ্রহণ করা সম্ভব হবে না।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনার মো. জাবেদ আলী কক্সবাজার সফরে গেছেন। মঙ্গলবার (আজ) জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারকের গোপালগঞ্জ সফরে যাওয়ার কথা। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ অসুস্থ থাকায় বাসায় অবস্থান করছেন। আজ কমিশনে শুধু প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ও নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজের অফিস করার কথা রয়েছে। তফসিল ঘোষণার আগে সংশ্লিষ্ট ফাইলে সংখ্যাগরিষ্ঠ কমিশনারদের মতামত লাগবে। তাই গতকাল রাতে দীর্ঘক্ষণ কমিশনারদের অপেক্ষা করতে হয়েছে সচিবালয়ে।

ইসির নির্বাচন শাখা সূত্রে জানা যায়, সব কিছু ঠিক থাকলে আজ ২৩৬টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। একই দিনে সারা দেশে এসব পৌরসভায় ভোট গ্রহণ করা হবে। গত রবিবার সকালে দলীয় মনোনয়নে মেয়র নির্বাচনের বিধান-সংক্রান্ত স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইনের গেজেট পৌঁছায় কমিশনে। এরপরই সিইসির নেতৃত্বে অন্য কমিশনাররা বৈঠকে বসে নির্বাচন পরিচালনা ও আচরণবিধিমালা চ‚ড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং-এর জন্য পাঠানো হয়। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ৩০ ডিসেম্বর রাখা হয়েছে বলে জানান একজন নির্বাচন কমিশনার।

সর্বশেষ ২০১১ সালে এ নির্বাচন হয়েছিল। স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের মতে, প্রার্থী তালিকা চ‚ড়ান্ত হওয়ার দিন ও ভোট গ্রহণের দিনের মধ্যে ১৫ থেকে ২১ দিন সময় রাখতে হবে। তার আগে তফসিল ঘোষণা, মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও বাছাই, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আপিল নিষ্পত্তি এবং সবশেষে চ‚ড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি করার জন্য ১৫ থেকে ২০ দিন সময় দরকার।

উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীরা পৌরসভার মেয়র পদের নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিতে পারবেন। বাকিরা স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিতে পারবেন। এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্দলীয় প্রতীক নিয়ে আগের মতোই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।

সর্বশেষ খবর