শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব শুরু

সুরের মূর্ছনায় হারানোর রাত

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

সুরের মূর্ছনায় হারানোর রাত

একদিকে স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তায় যানজটের দীর্ঘ লাইন অন্যদিকে স্টেডিয়ামের সব প্রবেশপথে সুরপিয়াসীদের সুশৃঙ্খল সারি। কড়া নিরাপত্তায় অপেক্ষার প্রহর শেষে সুরের কাক্সিক্ষত স্থানে প্রবেশ। চিরচেনা আর্মি স্টেডিয়ামও পরিণত হলো সুরের মহাসাগরে। বাঁধভাঙা উল্লাস আর সুরের মূর্ছনায় স্নাত হওয়ার এক শৈল্পিক ঢেউ উপচে পড়েছিল আর্মি স্টেডিয়ামের প্রতিটি গ্যালারি আর সমগ্র প্রাঙ্গণে। মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে শাস্ত্রীয় সংগীতের ছলাকলার ঐশ্বরিক খেলা আর উৎসবস্থলে সংগীতপিপাসুদের আনন্দের উত্তাল ঢেউয়ে হারিয়ে যাওয়া। এমন চিত্রই ছিল বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের উদ্বোধনী রাতে। স্কয়ার টয়লেট্রিজের নিবেদনে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে গত সন্ধ্যায় রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে চতুর্থবারের মতো শুরু হলো ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৫’। বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী গত বছর তৃতীয়বারের আসরে মঞ্চে বক্তৃতারত অবস্থায় মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন বলে এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে তার স্মৃতির উদ্দেশে। মিনু হকের নৃত্য পরিচালনায় পল্লবী ড্যান্স একাডেমির শিল্পীদের দলীয় নৃত্যের মধ্য দিয়ে এবারের আসরের সূচনা ঘটে। অনুষ্ঠান শেষে পল্লবী ড্যান্স সেন্টারের পরিচালক মিনু হকের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন সুলতানা কামাল। অনুষ্ঠানে পণ্ডিত সুরেশ তালওয়ালকারের তত্ত্বাবধানে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন তবলাকীর্তন। পরিবেশনা শেষে শিল্পীদের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আসরে ধ্রুপদ সুরের মূর্ছনায় সুরের ভক্তদের মাঝে প্রাণের সঞ্চার ঘটান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। দলীয় কণ্ঠে রাগ মালকোশ, আলাপ জোড় আর ঝালা যোগে চৌতালে পরিবেশন করেন সনাতন ধ্রুপদ ‘জয়তি জয়তি শ্রীগণেশ’ ও সুরতালে বাঁধা সনাতন ধ্রুপদ পরিবেশন করেন শঙ্কর গীরিজাপতি। এবারের আসরের উদ্বোধনী রাতের মূল আকর্ষণ ছিলেন ভারতের প্রখ্যাত ওস্তাদ পণ্ডিত কৌশিকী চক্রবর্তী। আসরের উদ্বোধনী রাতে কর্ণাটকী বাঁশিতে সুর লহরির ঢেউ তোলেন ভারতীয় শিল্পী জয়াপ্রদা রামমূর্তি। শিল্পীর বাঁশির সুরে শিল্পের অনুরাগীদের হৃদয়ের তন্ত্রীতে বেজে ওঠে ভালোলাগা ও ভালোবাসার অনুরণন। মঞ্চে শিল্পীদের সুরের ব্যাকরণগত তালের শৈল্পিক সুরের মূর্ছনা আর অনুষ্ঠানস্থলে সুরের পাগলদের মুহুর্মুহু করতালি। প্রথম রাতের আসরে আরও সংগীত পরিবেশন করেন রাহুল শর্মা (সন্তুর), পণ্ডিত কুশল দাস (সেতার) ও বিদুষী বম্বে জয়শ্রী (কর্ণাটকী সংগীত)। প্রধান অতিথি থেকে এর উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন ও রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।

আজ উৎসবের দ্বিতীয় রাতের আসরে অংশ নেবেন অভিজিৎ কুণ্ডু (ধ্রুপদ), জয়ন্তী কুমারেশ (সরস্বতী বীণা), সুস্মিতা দেবনাথ (খেয়াল, বেঙ্গল পরম্পরা), পণ্ডিত উদয় ভাওয়ালকার (ধ্রুপদ), পণ্ডিত সুরেশ তালওয়ালকার (একক তবলা), ড. বালমুরালী কৃষ্ণ (কর্ণাটকী সংগীত) ও তার সঙ্গে বাঁশিতে থাকবেন পণ্ডিত রণু মজুমদার, শুভায়ূ সেন মজুমদার ও পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী (খেয়াল)।

সর্বশেষ খবর