সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

যানজটে দিনে ক্ষতি ৫৩ কোটি টাকা

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

যানজটে দিনে ক্ষতি ৫৩ কোটি টাকা

অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ আর যেখানে সেখানে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে ঢাকা সিটিতে যে যানজট সৃষ্টি হয়- তাতে দৈনিক ক্ষতির পরিমাণ ৫৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতি হিসাব করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে, উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতেকরে সামনের দিনগুলোতে ঢাকা সিটির ট্রাফিকজট পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এ প্রতিবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ঢাকা সিটির সাম্প্রতিক গণপরিবহন ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে এতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতিদিন ৩ কোটি ট্রিপ তৈরি হয় ঢাকাতে। এর বেশিরভাগই বাস ট্রিপ। এগুলো বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকা দিয়ে চলাচল করে। এই যানবাহনগুলো কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। এমন কি এসব যানবাহনের কোনো সাংগঠনিক ভিত্তিও নেই। কোনো ধরনের বিকল্প যানবাহনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন যাত্রীদের কাছে এসব বাসই গন্তব্যে পৌঁছানোর একমাত্র ভরসা। এর বাইরে ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা, রিকশা এবং মোটরসাইকেল ঢাকায় চলাচলের অন্যতম বাহন। প্রতিবেদনে ঢাকার উন্নয়ন উদ্যোগের সমালোচনা করে বলা হয়েছে, বর্তমান ঢাকার উন্নয়ন চিত্র অপরিকল্পিত এবং নিয়ন্ত্রণহীন। ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা এবং গণপরিবহন পরিকল্পনাকে পাত্তা না দিয়েই এসব উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া না হলে ঢাকা সিটির গণপরিবহন ব্যবস্থা আরও বেশি যানজটের চাপে পড়বে। বর্তমানে ঢাকা সিটির মোট জনসংখ্যা দেড় কোটি উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল মেগাসিটিগুলোর মধ্যে ঢাকা একটি। ২০৩৫ সালে এই সিটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখে উন্নীত হবে। বিশ্বের ১০টি মেগাসিটির একটিতে পরিণত হবে ঢাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ আরও বলছে, ঢাকা গণপরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ২০০৫ সালে যানবাহন চলাচলে একটি কৌশলগত পরিকল্পনা (এসটিপি) প্রণয়ন করে। ওই এসটিপিতে যানজট কমাতে ঢাকা সিটিতে এমআরটি, বিআরটি এক্সপ্রেসওয়ে, সড়ক ও রেলযোগাযোগসহ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ছাড়াও ঢাকার চারপাশে অভ্যন্তরীণ নৌপথ চালুর সুপারিশ করা হয়। সে অনুসারে এরই মধ্যে মেট্রো রেল যোগাযোগ এবং বিআরটি প্রকল্প শুরু হয়েছে, যার মধ্যে প্রথমটি ২০১৯ সালে এবং দ্বিতীয়টি ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা। তবে সীমিত সম্পদ এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কারণে পরিকল্পনা অনুযায়ী এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশয় রয়েছে। যোগাযোগ খাতে বাজেট স্বল্পতার কারণে সংশোধিত এসটিপি বাস্তবায়ন করাও চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।

সর্বশেষ খবর