সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হাজতখানা থেকে পালালেন বরখাস্তকৃত এসআই

আদালত প্রতিবেদক

রাজধানীতে জজ আদালতের হাজতখানা থেকে পালিয়ে গেছেন একটি হত্যা মামলার আসামি কাফরুল থানার বরখাস্তকৃত সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. রেজাউল করিম পাটোয়ারী (বিপি নং-৭৭০৪১২৮৭১৮)। গতকাল এ ঘটনা ঘটে। তিনি রাজধানীর কাফরুলের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার আসামি। গতকাল আদালতে হাজির হলে রেজাউল করিম পাটোয়ারী (৩৭)সহ মামলার অপর দুই আসামির জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান। অন্য আসামিরা হলেন- কাফরুল থানার বরখাস্তকৃত এসআই মো. নুরুজ্জামান (৩৫) ও সোর্স বাবু ওরফে রতন ওরফে বাবু মিয়া (৪৮)। আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশের কিছুক্ষণ পরে হাজতখানা থেকে পালিয়ে যান রেজাউল করিম পাটোয়ারী। তিনি চাঁদপুর জেলার দক্ষিণ মতলব থানার পেয়ারী খোলার নুরুল ইসলাম পাটোয়ারীর ছেলে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও আদালত পুলিশ প্রধান ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, আদালত পুলিশের হেফাজত থেকে রেজাউল করিম পাটোয়ারী নামের এক আসামি পালিয়েছেন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। জানা গেছে, গতকাল এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ১৯ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন বিচারক। এর আগে আসামিদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। পরে এজলাস থেকে আসামিদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার সাহেবগঞ্জ গ্রামের মৃত জামাল হকের ছেলে ফারুক হোসেন কামাল রাজধানীর কাফরুলে সাব-কন্ট্রাক্টের কাজ করতেন। এরই মধ্যে ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আসামি এসআই নুরুজ্জামান ও সোর্স রতন কাফরুলের ভাণ্ডারি স্টিলের দোকান থেকে ফারুক হোসেনকে মামলা আছে বলে কাফরুল থানায় নিয়ে যায়। ওই দিন রাত ১১টার সময় ফারুকের খোঁজ নিতে বাদী থানায় গেলে হাজতের ভিতর থেকে তার ভাইয়ের কান্নার চিৎকার শুনতে পান। পরে পুলিশকে ম্যানেজ করে বাদী ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করলে আসামি এসআই নুরুজ্জামান ও সোর্স রতন ঘুষের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে বলেন। এ ছাড়া টাকা না দিলে মেরে ফেলবে বলে জানান আসামিরা। ২১ ফেব্রুয়ারি ফারুককে কাফরুল থানার ৫৭(২)১২ নম্বর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত আসামির শরীরে জখমের চিহ্ন দেখে রিমান্ড আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি কারাগারে ফারুক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাত সাড়ে ১১টায় মারা যান ফারুক। এ ঘটনায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি হত্যা মামলা  করেন  ফারুকের বোন পারভীন হক। পরে আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। ওই মামলা তদন্ত করে সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মাজহারুল হক আসামিদের বিরুদ্ধে গত ১ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

সর্বশেষ খবর