সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
শিশুশিল্পীকে ধর্ষণচেষ্টা

স্বজনদের থানা থেকে বের করে দিল পুলিশ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক শিশু কণ্ঠশিল্পীকে ধর্ষণচেষ্টা চালিয়েছে শিশুটির প্রতিবেশী চাচা ও চাচাতো ভাই। উদ্ধারের পর শিশুর মা-বাবা বিচার চাওয়ায় প্রভাবশালী কয়েকজন সালিশ বসিয়ে ‘ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার আদেশ দেন’। বিচার না পেয়ে শিশুটি মুষড়ে পড়ে বাড়ি ফিরে বিষপান করে। মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে তার স্বজনরা। শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের হায়াতখারচালা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। টানা সাতদিন চিকিৎসার পর মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে থানা থেকে তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন শিশুর স্বজনরা। নিরুপায় শিশুর মা-বাবা গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেছেন। শিশুটি (১৩) এ বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা দিয়েছে। ধর্ষণ চেষ্টাকারীরা প্রতিবেশী আইজুদ্দিনের ছেলে মহসিন (৩০) ও মৃত সোবহানের ছেলে আরমান। আরমান ওই শিশুর প্রতিবেশী চাচা ও মহসিন চাচাতো ভাই বলে জানা গেছে। শিশুটি জানায়, রাত ১০টার দিকে প্রতিবেশী চাচা আরমান ও চাচাতো ভাই মহসিনের সঙ্গে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় তারা। এক পর্যায়ে সে দৌড়ে দরগায় একটি কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেয়। টের পেয়ে স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম স্বপন নামে এক তরুণ তাকে বাড়ি পৌঁছে দেন। শিশুটির মা জানান, বাড়ি ফিরে মেয়েটি তাকে ঘটনা জানায়। পরদিন তার স্বামী হায়াতখারচালা হাজী আবদুল কাদের প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ওবায়দুল্লাহ্ খন্দকারের কাছে ঘটনা জানিয়ে থানায় মামলা করার পরামর্শ চান। শিশুর বাবা বলেন, পরে ওই রাতেই ওবায়দুল্লাহ্ তার বাড়িতে সালিশ বসিয়ে ‘যা হওয়ার হয়েছে, এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার আদেশ দেন।’ অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল্লাহ্ খন্দকার উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনি কোত্থেকে জানলেন আমার বাড়িতে সালিশ বসিয়েছি। এটা যার বিষয় তার কাছ থেকেই জানুন। যত্তসব ফালতু বিষয়। শিশুর বাবা জানান, বিচার না পেয়ে তার মেয়ে লজ্জায়-ঘৃণায় ওই রাতেই বিষপান করে। থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এসআই হেলাল উদ্দিন মামলা নেওয়া যাবে না বলে তাদের থানা থেকে তাড়িয়ে দেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই হেলাল উদ্দিন বলেন, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা শুনেই আমি ওই শিশুর বাবাকে বারবার ফোন করে থানায় আসতে বলেছিলাম। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আমি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর