চিকিৎসক সংকট ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা। সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের হাসপাতালে থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ চিকিৎসক নিজ খেয়াল-খুশি মতো কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করেন। ফলে সকাল থেকে রোগীদের ভিড় থাকলেও তারা চিকিৎসা সেবা পান দুপুরে।
জানা গেছে, ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে ২৫০ শয্যার চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে। ফলে সর্বক্ষেত্রে সংকট লেগেই রয়েছে। ওষুধ সংকট না থাকলেও রোগীদের বাইরে থেকে প্রায় প্রতিটি ওষুধই কিনতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসকের মঞ্জুরিকৃত ৪২টি পদ থাকলেও রয়েছেন মাত্র ১৬ জন এবং শূন্যপদ রয়েছে ২৬টি। তারপরও ১৬ জন চিকিৎসক নিয়মিত কর্মস্থলে না আসায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। হাসপাতালে মঞ্জুরিকৃত সেবা তত্ত্বাবধায়ক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। সিনিয়র স্টাফ নার্স, স্টাফ নার্স, সহকারী নার্স, সুপার ভাইজার ও মেডিকেল টেকনোলজি (ল্যাব)-এর ৪২টি পদের মধ্যে ৪টি পদও শূন্য রয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, চিকিৎসকরা দুপুর ১২টার পর কর্মস্থলে আসায় চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগী সকাল ৮টায় এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে যেতে বাধ্য হন। দেরিতে আসা কনসালট্যান্টদের বার বার সময় মতো কর্মস্থলে আসার জন্য বলা হলেও তারা এতে কর্ণপাত না করে বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়মিত রোগী দেখতে ব্যস্ত থাকছেন। প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে হাসপাতালের ভিতরে নোংরা পরিবেশ বিরাজ করছে। কুকুর-বিড়াল হাসপাতালের ভিতর চলাফেরা করতে দেখা যায়। হাসপাতালের বর্জ্য পার্শ্ববর্তী খোলা জায়গায় ফেলে রাখায় আশপাশের পরিবেশও হুমকির মুখে পড়েছে।সিভিল সার্জন ডা. মো. আলাউদ্দিন জানান, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালটি ২০১৪ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও আগের জনবল দিয়ে কার্যক্রম চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কনসালট্যান্টসহ চিকিৎসকদের দেরিতে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বার বার তাদের বলা হলেও এর কোনো সুরাহা হচ্ছে না।’