বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বিছানায় স্ত্রীর লাশ, ফ্যানে ঝুলন্ত স্বামী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল নগরীর কাউনিয়ায় স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী আÍহত্যা করেছেন! গতকাল দুপুর ১২টায় কাউনিয়া থানা পুলিশ প্রথম লেনের ছত্তার ম্যানশনের ভাড়া বাসা থেকে নিঃসন্তান দম্পতির রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যার ক্লু উদঘাটনে আলামত সংগ্রহ করেছেন সিআইডির বিশেষজ্ঞরা। ওই দম্পতি আত্মহত্যা করেছে বলে স্থানীয়রা সন্দেহ করছেন। তবে পুলিশের ধারণা, পারিবারিক কলহ থেকে আগে স্বামী ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে এবং বালিশ চাপায় হত্যা করে। পরে স্বামী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে।

নিহতদের নাম আবদুল খালেক ঢালী ও মুকুল বেগম। খালেক রাজমিস্ত্রি ও মুকুল বরিশাল আদালতে আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। মুকুলের বাড়ি সদর উপজেলার কাগাশুরা ও খালেকের বাড়ি মেহেন্দিগঞ্জের শ্রীপুর গ্রামে। প্রায় এক যুগ আগে প্রেম করে তাদের বিয়ে হয়। নগরীর কাউনিয়ার ছত্তার ম্যানশনের টিনের ঘরে ২০১২ সাল থেকে বসবাস করছিলেন তারা। স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক যুগের দাম্পত্য জীবনে সন্তান না হওয়ায় প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত। আবার তারা নিজেরাই মিলেমিশে যেতেন। সোমবার রাত ৯টার দিকে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন খালেক ও মুকুল। গতকাল সকালে পানি সংগ্রহের জন্য বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মাধবী বসু মুকুলকে ডাকাডাকি করেন। দীর্ঘক্ষণেও সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ফাঁক করে উঁকি দিয়ে স্বামী খালেককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কে এম মোর্তজা আবেদীন জানান, মুকুলের লাশ খাটের ওপর শোয়ানো ও তার স্বামীর লাশ ছিল ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত। দুটি লাশেই ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন ছিল। নিজেদের মধ্যে কলহের জের ধরে একজনকে হত্যা করে, অপরজন আÍহত্যা করতে পারে বলে সন্দেহ তার।

দুটি লাশ উদ্ধারের খবরে গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার গোলাম রউফ খান এবং উপ-কমিশনার (উত্তর) আবু রায়হান মো. সালেহসহ অন্যরা। পরিদর্শন শেষে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার গোলাম রউফ খান সাংবাদিকদের বলেন, ভিতর থেকে ঘরের দরজা আটকানো ছিল। বাইরে থেকে এটা কেউ করেনি, কিংবা এটা কোনো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডও মনে হচ্ছে না। পারিবারিক কলহ থেকে উভয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে অপরকে কোপায়। এরপর স্বামী বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা নিশ্চিত করেন। পরে স্বামী ফ্যানের সঙ্গে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আÍহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করছেন তিনি। তারপরও অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডির বিশেষজ্ঞরা কিছু আলামত সংগ্রহ করেছেন এবং সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করেই তারা তদন্ত শুরু করেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর