শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ থেকে জ্বালানি নিতে চায় নেপাল

বাণিজ্য ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে চিঠি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছে নেপাল। এরই মধ্যে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নেপাল অয়েল করপোরেশন লি. (এনওসি) বাংলাদেশি একটি কোম্পানিকে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সরবরাহে অনুমোদন দিয়েছে। ওমেরা পেট্রোলিয়াম লি. (ওপিএল) নামে ওই বাংলাদেশি কোম্পানি নেপালের অনুমোদন পাওয়ার পর এখন দেশটিতে জ্বালানি সরবরাহের অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। জানা গেছে, ওপিএল বাংলাদেশের মবিল যমুনা লুব্রিক্যান্ট লি. (এমজেএল)-এর একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি। আর এমজেএলে ২৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে সরকারের।

১৮ নভেম্বর জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই চিঠিতে অবশ্য নেপালের পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতেও জ্বালানি সরবরাহের অনুমতি চেয়েছে ওপিএল। কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইশতিয়াক আহমেদ তাতে উল্লেখ করেন, জ্বালানিস্বল্পতার কারণে নেপাল দীর্ঘমেয়াদে এলপিজি সরবরাহে অংশীদার খুঁজছে। আঞ্চলিক ট্রানজিট সহায়তার আলোকে, বিশেষ  করে চার দেশীয় (বিবিআইএন) মোটরযান চলাচল চুক্তির আওতায় নেপালের পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যেও প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহে ওপিএলের আগ্রহ ও প্রয়োজনীয় সক্ষমতা রয়েছে। ওপিএল আরও জানিয়েছে, ভারতের করিডোর দিয়ে নেপালে বাংলাদেশি ট্রাক প্রবেশ করতে না পারলেও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। ফলে ওই পথ ধরে কাঠমান্ডু থেকে তেলবাহী খালি ট্যাংকার পাঠাবে নেপাল, যেগুলো ওপিএলের মংলা, বাগেরহাট, ঘোড়াশাল ও নরসিংদী টার্মিনাল থেকে ট্রানজিট সুবিধায় প্রয়োজনীয় এলপিজি ভরে নিয়ে যাবে।

এর আগে অক্টোবরে ওপিএলকে জ্বালানি সরবরাহে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চিঠি পাঠায় নেপালের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনওসি। ওই চিঠিতে ওপিএলকে এক্সক্লুসিভ এলপিজি সরবরাহকারী অংশীদার হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়, খুব শিগগিরই যেন বাংলাদেশি কোম্পানিটি সীমান্ত বাণিজ্যের মাধ্যমে নেপালে জ্বালানি সরবরাহ শুরু করে।

এদিকে বাংলাদেশি কোম্পানির মাধ্যমে জ্বালানি নেওয়ার পাশাপাশি নেপাল চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশ থেকে জ্বালানি আমদানির সুযোগ চেয়েছে সরকারের কাছে। বন্দর ব্যবহারে নেপালের অনুরোধ ইতিবাচক দৃষ্টিতে বিবেচনা করছে সরকার। গত সোমবার (৩০ নভেম্বর) নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস দেশটির কর্মকর্তাদের বলেন, নেপালে জ্বালানি সংকট দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশ খুবই উদ্বিগ্ন। হিমালয়কন্যার জ্বালানি ও তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপি গ্যাস) আমদানির জন্য আমাদের সরকার কাঠমান্ডুকে মংলা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ দিতে প্রস্তুত। রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে নেপালের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিমালয়ান টাইমস’ জানায়, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে দুই বন্দর ব্যবহারের সুযোগের বিষয়ে কাঠমান্ডুকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে। কাঠমান্ডুও বাংলাদেশের প্রস্তাব বিবেচনার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে উড়োজাহাজের জ্বালানি নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রসঙ্গত, সংবিধান সংশোধন নিয়ে ভারত সীমান্তে দুই মাসের অবরোধের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য ও রান্নার গ্যাসের দারুণ সংকটে পড়েছে নেপাল।

সর্বশেষ খবর