শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হাওরে অতিথি পাখির ঝাঁক

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

হাওরে অতিথি পাখির ঝাঁক

শীত যত বাড়ছে, মৌলভীবাজারের হাওরগুলোতে অতিথি পাখির সংখ্যাও ততই বাড়ছে। হাওরগুলোর মধ্যে রয়েছে জেলার কুলাউড়া উপজেলায় হাকালুকি হাওর, রাজনগর উপজেলায় হাওর, কাউওয়া দীঘি ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বাইক্কার বিল। দেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকিসহ, কাউওয়া দীঘি ও বাইক্কার বিলে এবার অতিথি পাখির সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে ঝাঁক ঝাঁক অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হয় হাওর তীরবর্তী এলাকা। বিশেষ করে ছোট বড় ২৩৮ বিলের সমন্বয়ে দেশের সর্ববৃহৎ হাকালুকি হাওরের প্রায় ১২ ভাগ এলাকা জেলার কুলাউড়া উপজেলায় অবস্থিত। এখানে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে অতিথি পাখি আসতে শুরু করে। দেশের যে সব স্থানে অতিথি পাখি আছে, তার মধ্যে হাকালুকি হাওরে সবচেয়ে বেশি পাখির সমাগম ঘটে। এবার দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও শীত আসতে দেরি হওয়ায় অতিথি পাখিও আসছে দেরিতে। তবে শীত যত বাড়ে পাখির সংখ্যাও ততই বাড়ে। হাকালুকি হাওরে অতিথি পাখিদের অবাধ বিচরণের জন্য পরিবেশ অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন কোস্টাল ওয়েটল্যান্ড অ্যান্ড বায়োডাইভারসিটি ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট হাওরে ১৪টি পাখির অভয়াশ্রম করে। কিন্তু এই প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে অরক্ষিত হয়ে পড়ে অতিথি পাখিরা। সিডব্লিউবিএম প্রজেক্ট প্রতিবছর হাওরে পাখিশুমারি করে আসছে। সেই সঙ্গে অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করায় প্রতি বছর হাকালুকি হাওরে অতিথি পাখি আসা বৃদ্ধি পায়। তবে কিছু অসাধু শিকারি বিষটোপে পাখি নিধন করত। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পাখি বিশেষজ্ঞসহ স্থানীয় সচেতন মহল। সিডব্লিউবিএমপি’র পাখিশুমারির তথ্য অনুসারে ২০০৬-০৭ সালে ৪২ প্রজাতির ৫২ হাজার, ২০০৭-০৮ সালে ৪০ প্রজাতির ১ লাখ ২৬ হাজারের বেশি, ২০০৮-০৯ সালে অনুষ্ঠিত পাখিশুমারিতে হাকালুকি হাওরে ৫৩ প্রজাতির মোট ৮৫ হাজারের বেশি পাখি পাওয়া যায়। এর মধ্যে দেশীয় ২০ প্রজাতি এবং পরিযায়ী ৩৩ প্রজাতি। আইপ্যাক কুলাউড়ার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাদের প্রকল্প ও বার্ড ক্লাবের সদস্যরা দুটি দলে ভাগ হয়ে পূর্বে হাকালুকি হাওরের নাগুয়া-ধলিয়া, গৌড়কুড়ি, উজান তুরল, নামা তুরল, চাতলা, হাল্লা, জল্লা, ফুয়ালা, বালুজুড়ি, ফুটবিল, কালাপানি, রঙ্গি, পর্তি, গুজুয়া, তেকোনা, বোয়ালজুড় বিলে শুমারিতে অংশ নেন। দুটি দলে নেতৃত্ব দেন বার্ড ক্লাবের সভাপতি ইনাম আল হক ও আইপ্যাকের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরামর্শক পল থম্পসন। নামাতুরুল বিলে একটি ধলাকপাল ছোট রাজহাঁস, পর্তিতে ১১টি উত্তরে টিকি ও র্জলায় ৬টি লাল নুড়ি বাটান এবং ফুটবিলে ১৩টি ধূসর পা রাজহাঁস পাখির দেখা মিলেছে। ৪টি বিরল প্রজাতির। বেশি দেখা গেছে টিকি হাঁস; এর সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৫৬৫টি। ২য় অবস্থানে লেঞ্জা, ৩য় অবস্থানে গিরি হাঁস। এদের সংখ্যা যথাক্রমে-৯৭১ ও ৪ হাজার ৫১৮টি। পরিবেশ অফিস সূত্রে জানা যায়, হাকালুকি হাওরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সংযুক্ত পাখি এখনো হাকালুকি হাওরে ফেরেনি। স্যাটেলাইট ট্রেকিং করে গত ৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনেকগুলো পাখি ভারতে অবস্থান করছে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। পূর্বে অনুষ্ঠিত শুমারিতে হাকালুকিতে ৫৬ জাতের প্রায় ৪৫ হাজার পাখি দেখা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর