শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

চুক্তি নিয়ে সংশয় কাটছে না দৃষ্টি ফ্রান্সের দিকে

নিজামুল হক বিপুল প্যারিস থেকে

চুক্তি নিয়ে সংশয় কাটছে না দৃষ্টি ফ্রান্সের দিকে

প্যারিস সম্মেলনে কোপেনহেগেনের মতো একটি চুক্তি হলেও আইনগত বাধ্যবাধকতা চুক্তি (এলবিএ) স্বাক্ষর নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এটি নাও হতে পারে। তবে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা এডহক ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনহ্যান্সড ডারবান প্লাটফর্ম (এডিপি) আলোচনা শেষ হওয়ার পর কপ চেয়ারম্যান ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন ফাবিয়াসের তত্ত্বাবধানে চলে যাবে এডিবি আলোচনার প্রতিবেদন। তারপর ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে উচ্চ পর্যায়ে দরকষাকষি। তখনই বোঝা যাবে এবারের সম্মেলন কোন পথে যাবে। তাই সবার দৃষ্টি এখন ফ্রান্সের দিকে। ৩০ নভেম্বর শুরু হয়েছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। গতকাল ছিল তৃতীয় দিন। ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। গতকাল পর্যন্ত এডিবি ১২টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন ভাগে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করছে। এ আলোচনার একটি আইনি দলিল তৈরি করে কপ চেয়ারম্যানের হাতে দেওয়া হবে। তা নিয়ে শুরু হবে পরবর্তী আলোচনা। এদিকে এবারের সম্মেলনেও আইনি বাধ্যবাধকতা চুক্তি বা এলবিএ হবে কিনা তা নিয়ে এখন থেকেই সংশয় দেখা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বক্তব্যের পর থেকেই এলবিএ চুক্তি নিয়ে এ সংশয় তৈরি হয়েছে। ওবামা নিজেদের দায়ী করলেও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে যে বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা মোকাবিলায় এবারের সম্মেলন থেকে কী করা হবে তা বলেননি। অবশ্য জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, একটি চুক্তিতে পৌঁছার বিষয়ে ফ্রান্সই এবার কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ দলের সমন্বয়কারী ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এলবিএর সম্ভাবনা ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে আসছে। তবে একেবারেই শূন্য নয়। কোপেনহেগেনের মতো একটি চুক্তি হতে পারে। আইনি বাধ্যবাধকতা চুক্তির সম্ভাবনা দেখছি না। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী আমেরিকাসহ বড় দেশগুলো এলবিএ চুক্তি চাচ্ছে না। উল্টো তারা চাচ্ছে, এলবিএ ইস্যুতে যাতে জোটবদ্ধভাবে শক্তিশালী কণ্ঠ সোচ্চার হতে না পারে এবং সে জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। তারপরও চেষ্টা চলছে এলবিএ চুক্তির বিষয়ে।

খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ইনটেনডেন্ট ন্যাশনাল কন্ট্রিবিউশন (আইএনডিসি) বা নিজ নিজ দেশ স্বেচ্ছায় কী পরিমাণ কার্বণ কমাবে সে বিষয়ে ১৯৫ দেশ যে প্রস্তাব করেছে তা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাপমাত্রা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামছে না। এ অবস্থা হলে গোটা বিশ্বের জন্য এটা বিপদ হবে।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্যারিস সম্মেলনে না আসার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে নানা নিরাপত্তাহীনতা, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলা। এসব কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের জলবায়ু সম্মেলনে আসেননি। তিনি বলেন, বিশ্বের যে কজন রাষ্ট্রনায়ক জীবনের ঝুঁকিতে আছেন তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম। গতকাল সম্মেলনে যোগ দিতে এসে মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে শক্তিশালী দল এসেছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। নিজেদের এবং বৈশ্বিক দরকষাকষিতে আমাদের টিমের সদস্যরা খুবই শক্তিশালী। তিনি বলেন, আইনি বাধ্যবাধকতার চুক্তি নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা আছে। হাছান মাহমুদ আরও বলেন, আমরা ক্ষতিপূরণের জন্য ঋণ চাই না। আমি এটার ঘোরতর বিরোধী। আমরা চাই প্রতিশ্রুত অনুদানের ন্যায্য হিস্যা। যারা ঋণের কথা বলেন, তারা না বুঝেই এসব বলেন।

সর্বশেষ খবর