বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত

প্রতিদিন ডেস্ক

যশোরে পৃথক দুটি ঘটনায় বন্দুকযুদ্ধে ২ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১ জন নিহত হয়েছে। লক্ষীপুরের রায়পুরে গুলিবিদ্ধ হয় একজন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এসব ঘটনা ঘটে। এ সংক্রান্ত নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

যশোর : যশোরে পৃথক দুটি বন্দুক যুদ্ধের ঘটনায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দুজন নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছে তিন পুলিশ সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে দুটি ওয়ান শুটারগান, কয়েকটি গুলির খোসা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। মধ্য রাতের দিকে ডিবি পুলিশের সঙ্গে ডাকাত দলের বন্দুক যুদ্ধের প্রথম ঘটনাটি ঘটে সদর উপজেলার রহমতপুরে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে। আর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে অভয়নগরে দুটি সন্ত্রাসী দলের মধ্যে।

যশোর ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবুল খায়ের বলেন, যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের রহমতপুরে একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে- এমন খবরে ডিবি পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় গেলে ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ডাকাত সদস্য লুটিয়ে পড়লে অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই ডাকাত সদস্যকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, একটি দা, গাছ কাটার করাত উদ্ধার করা হয়। এই বন্দুক যুদ্ধের ঘটনায় আহত ডিবি পুলিশের সদস্যরা হলেন, এসআই তোফায়েল আহমেদ, কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও রাসেল। তাদের প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও পরে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে অভয়নগর থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত ভোর রাতের দিকে স্থানীয় চরমপন্থি সন্ত্রাসী গ্রুপ জিয়া বাহিনী ও তুরা-নসো বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তুরা-নসো বাহিনীর প্রধান বিদ্যুতকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে অভয়নগর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও গুলির তিনটি খোসা উদ্ধার করে। ওসি জানান, নিহত বিদ্যুতের বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরকসহ মোট ৯টি মামলা রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তোফায়েল আহমেদ মিলন (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। তোফায়েলের বাড়ি সদর উপজেলার রানীহাটির রামচন্দ্রপুর হাট গ্রামে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মহারাজপুর ইউনিয়নের চক-আলমপুর তিনসাকো এলাকায়। গতকাল সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত মিলনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় ৮টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। র‌্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার স্কোয়ার্ডন লিডার মোবাশ্বের রহিম জানান, রাত আড়াইটার দিকে র‌্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের একটি টহল দল ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় পার্শ্ববর্তী একটি আমবাগান থেকে দুর্বৃত্তরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে র‌্যাবও পাল্টা গুলি করে। আধাঘণ্টা ধরে চলা গুলিবিনিময় শেষে ঘটনাস্থলে একটি লাশ দেখতে পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলে সকালে তারা লাশটি উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলবার, একটি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি, ৪টি ককটেল ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। তবে মিলন র‌্যাবের গুলিতে নাকি দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছে র‌্যাব তা নিশ্চিত নয়। এদিকে নিহত মিলনের মা ফিরোজা বেগম (৫০) জানায়, মিলন ঢাকার মিরপুরে রাজমিস্ত্রির কাজ করাকালে ১৯ নভেম্বর র‌্যাবের লোকজন তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী র‌্যাব ক্যাম্পে যোগাযোগ করে তার সন্ধান না পাওয়ায় গত ৪ দিন আগে মিলনের দাদি জলেনুর বেগম মিরপুর থানায় একটি জিডি করেন।

লক্ষীপুর : লক্ষীপুরের রায়পুরে পুলিশ ও ডাকাত দলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে মুসলিম নামে এক ডাকাত গুলিবিদ্ধসহ আরও ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে  উপজেলার সাইচা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মুসলিমকে উদ্ধার করে লক্ষীপুর সদর হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অপর আহত পুলিশ সদস্য এসআই সাইদ, তৌহিদ, শরীফসহ ৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। এ ঘটনায় ডাকাত দলের আরেক সদস্যকে আটক ও ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৩ রাউন্ড গুলিসহ ডাকাতির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন জানান, ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশ অভিযানে গেলে ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ৭ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।

সর্বশেষ খবর