শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগের থানা ঘেরাও ককটেল বিস্ফোরণ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগের দুই কর্মী গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে থানায় হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত সহিংসতা বন্ধে পুলিশ  ৬ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়েছে। ছাত্রলীগ বলছে, দুই কর্মীকে গ্রেফতারের পর পুলিশ অস্বীকার করায় উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের এমপি জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক ছেলুন থানায় এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ি গ্রামের সাঈদ আলীর ছেলে আশাদুল হক ও একই গ্রামের বিশারত আলীর ছেলে খালিদ মাহমুদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দুজনের বিরুদ্ধেই মারামারি ও ভাঙচুরের অভিযোগে একাধিক মামলা আছে। দুজনের বিরুদ্ধেই আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। তাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাত ১০টার দিকে একদল ছাত্রলীগ কর্মী চুয়াডাঙ্গা সদর থানার সামনে শহীদ হাসান চত্বরে এসে ককটেল হামলা করেন। পুলিশ দ্রুত থানা থেকে বের হয়ে বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার সহকারী পুলিশ সুপার ছুফি উল্লাহসহ কনস্টেবল রুবেল, কাদের, আলী আশরাফ ও তারিক আজিজ আহত হন। আহতদের রাতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপার ছুফি উল্লাহ জানান, এ ঘটনায় তিনি বাম হাতে আঘাত পান। গ্রেফতারকৃতদের গতকাল সকালে আদালতে নেওয়া হলে দুজনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চুয়াডাঙ্গার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ড. এ বি এম মাহমুদুল হক। এসব ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবাইদ বিন আজাদ সুস্তির জানান, ‘গ্রেফতার করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা থানায় ফোন করি। থানা থেকে বলা হয়, তারা কাউকে গ্রেফতার করেননি। আমরা নিশ্চিত হয়েছিলাম, পুলিশ তাদের আটক করেছে। আটকের বিষয়টি পুলিশ অস্বীকার করার কারণেই থানার সামনে বিক্ষোভ করতে বাধ্য হই।’ এদিকে হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন জেলা আওয়ামী লীগ কার‌্যালয়ে গতকাল বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে এমন ঘটনাও ঘটেছে গ্রেফতারের পর পুলিশ অস্বীকার করেছে এবং পরে গ্রেফতারকৃতের লাশ পাওয়া গেছে। পুলিশ তথ্য গোপন না করলে ছাত্রলীগের ছেলেরা নিশ্চিন্ত থাকত। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমি থানায় গিয়ে বলেছিলাম, আমি আসামি ছাড়াতে আসিনি। যাদের গ্রেফতার করেছেন তাদের আদালতে সোপর্দ করুন। আমি জানতে এসেছি, পুলিশ কেন গুলিবর্ষণ করল। চুয়াডাঙ্গাকে কেন পুলিশ অশান্ত করল। এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান দেননি।’ সংবাদ সম্মেলনে সোলায়মান হক ছেলুন আরও বলেন,  নাশকতামূলক কাজে জড়িত থাকায় সারা দেশে জামায়াত নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হলেও চুয়াডাঙ্গার পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরও পুলিশ আসামি ধরে না। পুলিশ পরিকল্পিতভাবে চুয়াডাঙ্গাকে অশান্ত করছে।

সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের এসব অভিযোগ সম্পর্কে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের প্রকাশ্যে থানায় নিয়ে আসা হয়। তা ছাড়া কেউ আমার কাছে গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাননি।’

সর্বশেষ খবর