রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

রপ্তানি খাতে আসছে সুখবর

ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রে পাবে বাণিজ্য অগ্রাধিকার

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

রপ্তানি খাতে বাংলাদেশের জন্য সুখবর আসছে। আগামী মার্চ থেকে ইসলামী দেশগুলোর সংস্থা ওআইসির ১২টি দেশে কার্যকর হতে যাচ্ছে ট্রেড প্রিফারেন্সিয়াল সিস্টেম (টিপিএস-ওআইসি)। এই ১২ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। ফলে স্কিমের শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্য সংশ্লিষ্ট সদস্য দেশগুলোর বাজারে অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা পাবে।

সম্প্রতি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইসলামী দেশগুলোর জোট ওআইসির ‘কমসেক’ বৈঠক থেকে এ সুখবর মিলেছে। গত ২৩ থেকে ২৬ নভেম্বর চার দিনব্যাপী ‘কমসেক’ (স্ট্যান্ডিং কমিটি ফর ইকনোমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কো-অপারেশন অব দ্য ওআইসি)-এর অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।  সেখানেই ঘোষণা দেওয়া হয় টিপিএস-ওআইসির সব শর্ত ১২টি দেশ রেটিফাই করায় ২০১৬ সালের মার্চ থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে এ সুবিধা কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ ছাড়াও ওআইসির এ বাণিজ্য অগ্রাধিকার জোটে রয়েছে সৌদি আরব, জর্ডান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও সিরিয়া (বহিষ্কৃত)। এ দেশগুলো একে অন্যের বাজারে অগ্রাধিকার সুবিধায় বাণিজ্যের সুযোগ পাবে। আগেই বলা হয়েছিল, চুক্তিবদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে ১২টি দেশ এ বাণিজ্য অগ্রাধিকার পদ্ধতির সব শর্ত রেটিফাই বা অনুমোদন করলেই এটি কার্যকর হয়ে যাবে। ২০০২ সাল থেকে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যে অগ্রাধিকার সুবিধা কার্যকর করার লক্ষ্যে ‘টিপিএস-ওআইসি’-তে চুক্তি করতে সদস্য দেশগুলোকে আহ্বান জানানো হয়। এরই মধ্যে ওআইসির ৫৭টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ৪০টি এ চুক্তিতে সই করেছে। তবে বেশির ভাগ সদস্য চুক্তি রেটিফাই না করায় এটি কার্যকর হচ্ছিল না। সর্বশেষ গত মাসে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ চুক্তির অধীনে স্পর্শকাতর পণ্যের একটি সংশোধিত তালিকা হস্তান্তর করে। আর বাংলাদেশের এ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে এমন ১২টি দেশের তালিকা পূর্ণ হয়। ওআইসির বাণিজ্য অগ্রাধিকার সুবিধা বা টিপিএস কার্যকর হলে অগ্রাধিকার পাওয়া যাবে শুল্কহারে। অর্থাত্ এ জোটে যেসব দেশ থাকবে, তারা একে অন্যের বাজারে অন্য দেশের চেয়ে কম শুল্ক দিয়ে পণ্য রপ্তানির সুযোগ পাবে। এ জোটে থাকা স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) জন্য থাকবে বিশেষ শুল্ক সুবিধা, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর চেয়ে কম হবে। এ সুযোগটিই ওআইসি দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। কর্মকর্তারা আরও জানান, এরই মধ্যে যে দেশগুলো চুক্তি রেটিফাই করেছে তার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র (এলডিসি)। ফলে চুক্তির শর্তে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সমান ট্যারিফ রেট কার্যকরের বিধান থাকলেও এলডিসির জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ১১ দেশে বিশেষ শুল্কছাড় সুবিধা পাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মনোজকুমার রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, টিপিএস-ওআইসি স্কিম অনুযায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলো একে অন্যের কাছে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে মোস্ট ফেভারেবল নেশন বা এমএফএন হিসেবে অগ্রাধিকার পাবে। সদস্য দেশগুলোর পণ্যের ট্যারিফ রেট সমান হবে। তবে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ট্যারিফ রেটে বিশেষ সুবিধা পাবে। সে হিসেবে আগামী মার্চ থেকে টিপিএস-ওআইসি কার্যকর হলে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্প্রসারণে একটি বড় ধরনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর