রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাটের বস্তা ব্যবহার না করায় ১২৪৭ মামলায় জরিমানা অর্ধ কোটি

দারুণ সাড়া পাচ্ছি : মির্জা আজম

বিশেষ প্রতিনিধি

ছয় পণ্যে পাটের ব্যাগের বাধ্যতামূলক ব্যবহারে সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। ৩০ নভেম্বর শুরু হওয়া অভিযানে চার দিনে ১ হাজার ৩টি মোবাইল কোর্টে ১ হাজার ২৪৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি— এ ছয়টি পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার না করায় জরিমানা আদায় হয়েছে ৫৬ লাখ ৭৬ হাজার ২০০ টাকা। সচেতনতার অভাব ও সরবরাহ  ঘাটতির কারণে এখনো কেউ কেউ পাটের বস্তা ব্যবহার করছেন না। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই ছয় পণ্যে পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে বলে মনে করছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। ‘ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট ২০১০’ নামের আইনটি কার্যকরে পাটকল রয়েছে এবং যেখানে পাটের বস্তা ব্যবহার হয় এমন ৩১টি জেলায় ১০টি মনিটরিং টিম কাজ করছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ছয় পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে পাটের হারানো সুদিন ফিরে আসবে বলে মনে করেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, পাটের বস্তা ব্যবহারে জেলায় জেলায় দারুণ সাড়া পড়ে গেছে। জেলা পর্যায়ের কোনো রাইস মিল আর প্লাস্টিক ব্যাগে চাল ভরছে না। মির্জা আজম বলেন, যতদিন পাটের বস্তার ব্যবহার শতভাগ বাস্তবায়ন না হবে ততদিন পর্যন্ত অভিযান চলতেই থাকবে। কোনো শেষ নেই। মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগে বেসরকারি পাটকলগুলোর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন প্রাইভেট মিল নির্ধারিত মূল্যের কম দামে পাটের বস্তা বিক্রি করছে। আমরা যে রেট করেছি সেটা ৭০০ গ্রামের। কিন্তু অনেকে এর চেয়েও ছোট সাইজের বস্তার অর্ডার দিচ্ছে। নিজেদের মতো করে অর্ডার দিয়ে বস্তা বানিয়ে নিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বেসরকারি মিলগুলো কম দামে পাটের বস্তা বিক্রি করছে। মির্জা আজম বলেন, প্যাকেজিং অ্যাক্ট বাস্তবায়নে আমি দারুণ সাড়া পাচ্ছি। চালকল মালিকরা বিশেষ করে কিছু অটো রাইস মিল নিজস্ব ব্র্যান্ডের চাল বানায়। এরা ৭০-৮০ টাকা কেজির চাল বানায়। ওদের একটু অভিমান, ক্ষোভ আছে আমাদের ওপর। ওরা বস্তার ওপর চকমকে, ঝকঝকে বিজ্ঞাপন মারে। আশা করছি, তারাও সবাই পাটের বস্তা ব্যবহারে গুরুত্ব দেবে। মির্জা আজম বলেন, দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ ও পাটের হারানো সুদিন ফেরাতে ‘ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট ২০১০’ আইনটি কার্যকর করাই আমাদের এ সময়ের অগ্রাধিকার। আইনটি বাস্তবায়ন হলে দেশের পাটকলগুলোতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং পাটকলগুলো সারা বছর সচল থাকবে। বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম মনে করেন, বেশি দাম ও সহজলভ্য না হওয়াই পাটজাত পণ্যের চাহিদা না থাকার প্রধান কারণ। তিনি বলেন, এ বিবেচনা থেকে ২৬টি মিলে পাটের ব্যাগের দাম বস্তাপ্রতি ১০ টাকা কমানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরও কমানো হবে। সাশ্রয়ী দামে পাটের ব্যাগ উত্পাদনেরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাটের ব্যাগ সহজলভ্য করতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সমন্বয় কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটির চাহিদা অনুযায়ী ব্যাগ সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া মিলগেট থেকে ব্যাগ বিক্রিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে চটের ব্যাগ অনেক সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য। তিনি বলেন, পলিথিন বা প্লাস্টিকের ব্যাগের কুফল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা হলে তখন মানুষই তা বর্জন শুরু করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর