শিরোনাম
রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
সেই ছাত্রনেতাদের চোখে গণঅভ্যুত্থান

গণতন্ত্রই হারানোর পথে : হাবিবুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণতন্ত্রই হারানোর পথে : হাবিবুর রহমান

‘গণতন্ত্র ছাড়া কোনো উন্নয়নই কখনো টেকসই হয় না। বিফলে যায় সেসব উন্নয়ন। যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা নব্বইয়ে আন্দোলন করেছিলাম সেই গণতন্ত্রই এখন হারানোর পথে। যে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা একদিন দলমত নির্বিশেষে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম গড়ে তুলে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছিলাম সেই স্বৈরাচারই আজকের সরকারের অংশীদার।’ কথাগুলো বললেন নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তুখোড় ছাত্রনেতা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তত্কালীন সভাপতি এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব। তিনি পরিষ্কার ভাষায় বলেন, নব্বইয়ের পরে একান্নব্বই সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যে রকমই হোক দেশে একটা গণতান্ত্রিক অবস্থা চলে আসছিল। কিন্তু ২০১৫ সালে এসে গণতন্ত্রের দেশ ঠিক তার উল্টোপথে যাত্রা শুরু করেছে। মানুষ তার ভোটাধিকার হারিয়েছে। আমরা এ অবস্থার জন্য সেদিন সব কিছু বিসর্জন দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করিনি। আমরা আন্দোলন করেছিলাম মানুষের ভোটাধিকারসহ শিক্ষা, খাদ্য, চিকিত্সা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনসহ সব মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সাধিত হবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন। কিন্তু আজ তার ঠিক উল্টোদিকে যাচ্ছে দেশ। প্রভূত উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আসলে কী দেশের মানুষের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কোনো উন্নয়ন তো হয়ই-নি, এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মানুষের ভাগ্যের উন্নতি হয়েছে। আর এরা প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন, সেটাকেই গড় করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান দেখানো হচ্ছে কাগজেপত্রে। তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো— কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের আকার। দেশে কোনো শিল্প কলকারখানা গড়ে না ওঠায় আমদানি সম্পূর্ণ এবং একই কারণে রপ্তানিও প্রায় বন্ধ আছে। আর সেজন্যই রিজার্ভ কোনো কাজে না লাগায় দিন দিন বেড়েই চলেছে। ব্যাংকগুলোতে জমছে অলস টাকার পাহাড়। প্রধানমন্ত্রীর একজন আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা দুই দিন আগে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, বাংলাদেশ এখন এক বিপজ্জনক অবস্থার সামনে। হাবিবুর রহমান হাবিব তার সঙ্গে একমত পোষণ করে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আমরা মানি আর না মানি, আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন, দোহাই আপনার আর সময় নষ্ট না করে বেগম খালেদা জিয়াসহ দেশের রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সমঝোতার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছান। দেশটাকে বাঁচান। ভারতীয়সহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো যে ইশারা-ইঙ্গিত দিচ্ছে, তাতে মোটেও ভালো ঠেকছে না। দেশটাকে অন্তত বাঁচান।  আর আপনার মন্ত্রিসভার সদস্যরা যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ ও তাদের দেশের মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন তাও ঠিক নয়। দেশ ও জনগণের নিরাপত্তার বৃহত্তম স্বার্থেই সবার সঙ্গে আলোচনা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে আবারও যাত্রা শুরু করুন। বিশেষ করে সুষ্ঠু ও অবাধ পরিবেশে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন করার মাধ্যমেই সেই যাত্রা শুরু হবে বলে প্রত্যাশা নব্বইয়ের আন্দোলনের এই অকুতোভয় সৈনিক হাবিবুর রহমান হাবিবের।

সর্বশেষ খবর