মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জেএমবির টার্গেটে দরগাহ-মাজার

সাখাওয়াত কাওসার

দরগাহ ও মাজার টার্গেট করেই বড় ধরনের হামলার ছক তৈরি করেছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা পীর-আউলিয়ার মাজার ও দরগায় হামলা করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চায় তারা। টার্গেট করা মাজার ও দরগাহগুলোর আশপাশে রেকির কাজও চলছে। তবে রেকি সম্পন্ন হয়েছে এমন মাজারের সংখ্যা ২০টি বলে জানিয়েছে গ্রেফতারকৃত জেএমবির সদস্যরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে পাঁচ দিনের রিমান্ডে থাকা তিন জঙ্গির কাছ থেকে এমন তথ্য  পেয়েছে পুলিশ। এর পরপরই ছকে থাকা মাজার ও দরগাহগুলোতে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গত শনিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা এলাকা থেকে জেএমবির সাবেক শূরা সদস্য মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে জার্মিন, এ এইচ এম খায়রুল আসাদ ওরফে সোহাগ (কারিগরি সহায়ক) ও কফিল উদ্দিন বিন আমিন নামের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তার স্বার্থেই মাজারগুলোর নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে ওই মাজারগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে জেলা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়াও হয়েছে। একই সঙ্গে জ্যামারের নেপথ্য সবকিছু খুঁজে বের করার কাজ চলছে।  সূত্র জানায়, জেএমবির অপারেশনের দায়িত্বে রয়েছে এমন একজনকে খোঁজা হচ্ছে। মূলত ওই ব্যক্তিই জেএমবির একটি অংশের হাল ধরেছে। অপারেশনের পাশাপাশি অর্থ জোগানের ব্যবস্থাও করছে সে। উদ্ধারকৃত জ্যামারটিও ওই ব্যক্তির মাধ্যমেই সংগ্রহ করা হয়েছে। সাধারণত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ছাড়া মোবাইল ফোনের জ্যামার কেউ ব্যবহার করা আইনত নিষিদ্ধ। শুধু তাই নয়, জ্যামার কিনতে হলেও সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিগন্যাল অপরিহার্য। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সোহাগ একটি বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করে। সে জেএমবিকে কারিগরি সহায়তা দিত। বিশেষ করে জেএমবির শূরা সদস্যদের বৈঠকের সময় এই জ্যামার ব্যবহারে সে সহযোগিতা করত। যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার করতে না পারে। সূত্র আরও জানায়, দেশের বিভিন্ন এলাকার মাজারগুলোতে সব সময়ই প্রচুর মানুষের আনাগোনা হয়। ওই মাজারগুলোতে হামলা করতে পারলে দেশে আতঙ্ক পরিবেশ তৈরি হবে। এটি সরকারকে বিব্রত করার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে দেখছে জেএমবির সদস্যরা। ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বলেন, জ্যামার অনেক স্পর্শকাতর একটি যন্ত্র। জঙ্গিরা কীভাবে জ্যামারটি সংগ্রহ করল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিগগিরই এর নেপথ্য ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সর্বশেষ খবর