বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বিরল প্রশান্ত শৈলবগা

আলম শাইন

বিরল প্রশান্ত শৈলবগা

প্রশান্ত শৈলবগা। অতি বিরল পরিযায়ী পাখি। চেহারা তত আকর্ষণীয় নয়। উপকূল ও মোহনা এলাকায় বিচরণ করে। খুব বেশি দেখা যাওয়ার তথ্য নেই।     কালেভদ্রে দেখা মেলে। মহেশখালী, সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও টেকনাফ এলাকায় মাত্র একবার দেখা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। ড. রেজা খান তার ‘বাংলাদেশের পাখি’ গ্রন্থে জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকায় কখনো কখনো দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। মূলত এরা পাথুরে উপকূলীয় এলাকা, প্রবালদ্বীপ, ম্যানগ্রোভ রেখাযুক্ত পাড় এবং বালুকাময় সৈকতে বেশি বিচরণ করে। বেশির ভাগই একাকী শিকারে বের হয়। ছোট দলেও দেখা যায়। তবে সাধারণত এক এলাকায় এক জোড়ার দখলে থাকে। জোয়ারে সিক্ত হয় অমন এলাকায় পদচারণা লক্ষণীয়। বক প্রজাতির অন্যদের মতোই শিকার কৌশল অবলম্বন করে। কণ্ঠস্বর কর্কশ। ডাকে ‘ওর্ক-ওর্ক...গ্রার্ক’ সুরে। ‘প্রশান্ত শৈলবগা’ পূর্ব এশিয়া, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় বিচরণ করে। বিশ্বে এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয় বিধায় আইইউসিএ প্রজাতিটিকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।

পাখির বাংলা নাম ‘প্রশান্ত শৈলবগা’, ইংরেজি নাম ‘প্যাসিফিক রিফ হেরন’ (Pacific Reef Heron), বৈজ্ঞানিক নাম Egretta sacra। এরা ‘মোহনার বক’ নামেও পরিচিত। দৈর্ঘ্য কমবেশি ৫৮-৬৬ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ৯০-১০০ সেন্টিমিটার। ওজন ৩৩০-৪০০ গ্রাম। দেহের সমস্ত শরীর নীলাভ-ধূসর অথবা নীলাভ-স্লেট রঙের হয়। লম্বা গলায় সাদটান। প্রজনন পালক ভিন্ন। এ সময় পিঠ ও বুকে বাহারি পালক দেখা যায়। অপেক্ষাকৃত ঠোঁট খাটো এবং ভারী। চোখের বলয় হলুদ। পা খাটো, মোটা, রং হলুদ। তবে ময়লা জমার কারণে হলুদের ওপর কালো ও সবুজের আভা দেখা যায়। অপ্রাপ্তবয়স্কদের রং ভিন্ন। প্রধান খাবার মাছ, ছোট কাঁকড়া, টিকটিকি ও পোকামাকড়। প্রজনন মৌসুম উপমহাদেশীয় অঞ্চলে মে থেকে জুলাই। নির্জন এলাকার পাথুরে গুহা অথবা পুরনো সেতুর ফাঁকফোকরে বাসা বাঁধে। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে ঘাস, লতাপাতা ও সরু কাঠি। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৫-২৮ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে মাস দুয়েকের মতো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর