বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সুন্দরবন ও বাঘ রক্ষায় এক সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও ভারত

নিজামুল হক বিপুল প্যারিস থেকে

সুন্দরবন ও বাঘ রক্ষায় এক সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও ভারত

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিদিনই প্যারিসের লা বুর্জে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কেন্দ্রের ভেতরে পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল হচ্ছে। এরই মধ্যে সম্মেলন কেন্দ্রের বিভিন্ন হলরুমে চলছে বিশ্বের ১৯৫টি দেশের মন্ত্রীদের বৈঠক। চলছে বিভিন্ন বিষয় ও ইস্যুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা, সেমিনার। লক্ষ্য শুধু একটি চুক্তিতে পৌঁছা। কিন্তু বিশ্ব নেতারা শুরুর দিনে যে ভাষায় কথা বলেছিলেন সেই ভাষা নেই আলোচনার টেবিলে। তারপরও শেষ পর্যন্ত কোপেনহেগেনের মতো একটি চুক্তি হলেও এটি যে বহুলপ্রত্যাশিত আইনি বাধ্যবাধকতা চুক্তি বা লিগ্যালি বাইন্ডিং এগ্রিমেন্ট (এলবিএ) হচ্ছে না, গত কয়েক দিনের আলোচনায় এটা প্রায় পরিষ্কার হয়ে গেছে। আর মাত্র ৬০ ঘণ্টার মতো সময় হাতে আছে দেশগুলোর। এলডিসি, সিডস, আফ্রিকান দেশগুলোসহ স্বল্পোন্নত ও দরিদ্র ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো এই সময়কে কাজে লাগিয়ে একটি ফলপ্রসূ সমাপ্তির চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও গত পাঁচ বছর ধরে প্যারিস সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আতিক রহমান বলেন, একেবারে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কোপেনহেগেনের মতোই একটি চুক্তি হবে। এই চুক্তির আলোকেই আগামী বছরের এপ্রিলে একটা রিভিউ হবে। তিনি বলেন, মিটিগেশন যেটা করা উচিত ছিল, উন্নত বিশ্ব সেটা করছে না। গত কয়েক বছর ধরে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন প্রকৃত ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু। তিনি বলেন, এখানে কিছু হবে না, এটা ঠিক নয়। যে প্রত্যাশা ছিল সেটি হচ্ছে না। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই দেখছি এই সম্মেলন শম্বুকগতিতে এগুচ্ছে। প্যারিসেও এর ব্যতিক্রম নয়। এদিকে গতকাল স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভারতের একটি সাইট ইভেন্টে কথা বলেছে ভারত ও বাংলাদেশের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী। এ আলোচনায় দুই দেশই একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের উপক‚লীয় এলাকায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে। বিশেষ করে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ রক্ষায় যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও ভারতের পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী প্রকাশ জাভাধিকার। ওই বৈঠকে দুই মন্ত্রীই বলেছেন, রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ সুন্দরবনের পশুপাখি হচ্ছে দুদেশেরই মূল্যবান সম্পদ। বাঘ কিংবা পশুপাখির কোনো সীমানা নেই। তাই তাদের রক্ষায় দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে। অন্যদিকে নরডিক কান্ট্রিজ পার্লামেন্টারি গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ দলের সদস্যরা। সাবেক মন্ত্রী এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের চার এমপি ও পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এতে অংশ নেন। বৈঠক শেষে হাছান মাহমুদ বলেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড নিয়ে গঠিত নরডিক কান্ট্রিজ গ্রুপ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চেয়েছে। তিনি তাদের জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ ইননোসেন্ট ভিকটিম। হাছান মাহমুদ বলেন, সব নেতিবাচক দিক তুলে ধরে আমরা বলেছি বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে। বাংলাদেশ তেমন কার্বন নিঃসরণ না করলেও মিটিগেশনের দিকেও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে। আমরা অনেক কিছু করেছি। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোলার প্যানেল হচ্ছে বাংলাদেশে।

সর্বশেষ খবর