শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ওয়ারীতে দরজায় তালা দিয়ে মেসে আগুন, নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার ওয়ারীর একটি মেসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে সুমন মিয়া (৪০), শহীদুল ইসলাম (২৫) ও শাকিব সিকদার (৩৫) দগ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিত্সাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা সোয়া ১টার দিকে সুমন না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। বুধবার রাত পৌনে ৩টার দিকে নারিন্দা মোড়ের হামীম রেস্তোরাঁর দ্বিতীয় তলায় হাজীর মেসে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সোহাগ ও রাজীব নামে দুই দুর্বৃত্তকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে পুলিশ।

বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিত্সক পার্থ শংকর পাল জানান, আগুনে সুমনের শরীরের ৮৫ শতাংশ, শহীদুলের ৮৫ শতাংশ ও শাকিবের ৩২ শতাংশ পুড়ে গেছে। দুপুরে চিকিত্সাধীন অবস্থায় সুমন মারা যান। দগ্ধ শহীদুল ও শাকিবের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিত্সা চলছে।

ওয়ারী থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, হামীম রেস্তোরাঁর দ্বিতীয় তলার পাঁচটি ঘর মেস হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। রাতে একটি ঘর থেকে ‘আগুন আগুন’ বলে চিত্কার শুনে অন্য কক্ষের বাসিন্দারা ছুটে যান। তারাই বাইরে থেকে তালা দেওয়া দেখে তা ভেঙে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় সুমন নামে একজন মারা যান। দগ্ধ শহীদুল ও শাকিব ধোলাইখালের ফেমাস ডিজেল পাম্পের কর্মচারী। নিহতের ফুফাতো ভাই মুরাদ হোসেন মুন্না জানান, সুমনের স্ত্রীর নাম মিনারা বেগম। ওই দম্পতির ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া সোহাগ ও ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া সোহানা নামে দুই সন্তান রয়েছে। সুমন নারিন্দার ওই মেসে সপ্তাহে পাঁচ দিন থাকতেন। বাকি দুই দিন শ্বশুরবাড়ি মুন্সীগঞ্জের টুঙ্গিবাড়ী উপজেলার শুভচুনি গ্রামে থাকতেন। মৃত্যুর আগে সুমন মিয়া জানান, ধোলাইখালে আহমেদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ নামে তার লেদ মেশিনের দোকান রয়েছে। ওই দোকানে সোহাগ ও রাজীব কাজ করতেন। একপর্যায়ে তারা মাদক গ্রহণে জড়িয়ে পড়েন। পরে তাদের দোকান থেকে বের করে দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। সুমন তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। সুমন তাদের কাছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পেতেন। ওই টাকা ফেরত না দিয়ে সুমনের কাছ থেকে উল্টো টাকা নিতেন সোহাগ ও রাজীব। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার ঝগড়া হয়েছে। সর্বশেষ ৩-৪ দিন আগে হামীম রেস্তোরাঁর সামনে তাদের সঙ্গে ব্যাপক ঝগড়া হয়।

সর্বশেষ খবর