মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে ফতুল্লা রণক্ষেত্র গুলিবিদ্ধ ৫

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পুলিশের সঙ্গে ট্রাক শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনার সময় পাঁচ শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। জানা গেছে, দুপুরে সাদা পোশাকে থাকা আজাদ নামে এক পুলিশ কন্সটেবলের সঙ্গে জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলামের হাতাহাতি হয়। এরই জের ধরে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় ট্রাক শ্রমিকরা কয়েকটি গাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর করেন। তারা রাস্তার ওপর আড়াআড়ি করে কাভার্ড ভ্যান রেখে টায়ার জ্বালিয়ে এক ঘণ্টাব্যাপী পঞ্চবটি-মুন্সীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখেন। সংঘর্ষের সময় শ্রমিকদের নিক্ষিপ্ত ইট-পাটকেলের আঘাতে ফতুল্লা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোস্তফা, এসআই কাদিরসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি বর্ষণ শুরু করে। ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান খান জানান, শটগান থেকে মোট ৪৫ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। ঘটনার ব্যাপারে জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের গাবতলী থেকে ফতুল্লার পঞ্চবটি যেতে তিনি একটি ইজিবাইকে চড়েন। তাতে আগে থেকেই দুই মহিলাযাত্রী ছিলেন। এ অবস্থায় জেলা পুলিশ লাইনস থেকে এক ব্যক্তি উঠে দুই মহিলার পাশে ঠাসাঠাসি করে বসেন। এর প্রতিবাদ করলে ওই ব্যক্তি চটে যান। তিনি বলেন, এ নিয়ে আমাদের উভয়ের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমাকে ইজিবাইকের ভিতরেই মারধর শুরু করেন। পরে আমি ঘটনাটি পঞ্চবটি ট্রাক স্ট্যান্ডের শ্রমিকদের জানাই। তখন স্ট্যান্ডের শ্রমিকরা পঞ্চবটি মোড়ে এসে জড়ো হন। ওই সময় তারা আমাকে মারধরের কারণ জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি নিজের নাম আজাদ এবং নিজেকে পুলিশ কন্সটেবল বলে পরিচয় দিয়ে দাপট দেখাতে থাকেন। তখন শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে তাকে গণপিটুনি দেয়। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় কন্সটেবল আজাদকে বাঁচাতে কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা এসে ট্রাক শ্রমিকদের ধাওয়া করেন। তারা এনায়েত ও বাদল নামে দুই শ্রমিককে ধরে ফেলেন। এরপর ফতুল্লা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোস্তফা এবং এসআই কাদিরের নেতৃত্বে পুলিশ এসে আটককৃত দুই শ্রমিককে তাদের হেফাজতে নেন। ওই সময় সহযোগীকে ছাড়িয়ে নিতে শ্রমিকরা পুলিশের ওপর চড়াও হন। তখনই উভয়পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পুলিশ শটগানের গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে গেলে পিছুহটে যান শ্রমিকরা। পরে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে রুখে দাঁড়ালে পুলিশ পিছুহটে ট্রাকস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে থাকা অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড পার্কের ভিতরে আশ্রয় নেয়। এ সময় শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে পুলিশের দুই এসআইসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।

সর্বশেষ খবর