মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ষড়যন্ত্রকারীদের বিষদাঁত ভেঙে দিচ্ছি, ভেঙে দেব

প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাকিস্তান একাত্তরের পরাজয় ভুলতে না পেরে অনেক ষড়যন্ত্র করছে। তাদের যারা দোসর আর এজেন্ট আমাদের দেশে এখনো আছে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতে চায়, অর্থনীতি ধ্বংস করতে চায়, দেশকে আবার গোলামির জিঞ্জিরে আবদ্ধ করতে চায়। তাদের ষড়যন্ত্র চলছে, চলবে। আমরা একে একে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষদাঁত ভেঙে দিচ্ছি, ভেঙে দেব। এ ষড়যন্ত্র ভেদ করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে নিয়ে যাব। গতকাল বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, টিভিতে দেখলাম খালেদা জিয়াকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে। এটা জাতির সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ এই খালেদা জিয়াই বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের মন্ত্রী বানিয়েছেন, তাদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছেন, তাদের বিচারের হাত থেকে রক্ষার জন্য আন্দোলনের নামে শত শত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে তিনি কী বোঝাতে চাচ্ছেন সেটিই হলো প্রশ্ন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু মুক্তিযোদ্ধাকেও দেখা যায় খালেদার সঙ্গে যেতে। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়। আমি এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সচেতন হতে বলব। আলোচনা সভায় বিশেষ বক্তা ছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আবদুল আলীমের কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী। আরও বক্তব্য দেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মাহবুব-উল আলম হানিফ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আকতারুজ্জামান ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও অসীমকুমার উকিল সভা পরিচালনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আমরা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করছি বা করতে যাচ্ছি তখন খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ছুটে এলেন, কী আকুতি নিয়ে তিনি চলে এলেন, সেটিও চিন্তা করে দেখেন। তিনি ভেবেছিলেন যে, তিনি ছুটে এসেই আন্দোলন করে সব কিছু রক্ষা করে ফেলবেন। কিন্তু পারেননি। শেখ হাসিনা বলেন, যখন কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়, তখন কত বড় বড় জায়গা থেকে ফোন আসে। কিন্তু ফাঁসি ঠেকাতে পারেনি। কারণ দেশকে অভিশাপমুক্ত করতে হবে। যুদ্ধাপরাধের সবগুলো বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে, এতে করে দেশ অভিশাপমুক্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, সেসব হত্যাকারী যুদ্ধাপরাধীর বিচার হচ্ছে, বিচার চলবে। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে পারে। বাংলাদেশের কোনো মানুষ যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে চায় তাহলে দেশবাসীকে বলব, তাদের ঘৃণা করুন এবং যারা বন্ধ করতে চাইবে তারাও যুদ্ধাপরাধী। তাদেরও বিচার যুদ্ধাপরাধী হিসেবে করতে হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী আলীম চৌধুরীর মেয়ে নুজহাত চৌধুরী পাঠ্যক্রমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দাবি করে বলেন, ক্লাস ওয়ান থেকে টেন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসবিষয়ক আলাদা একটি সাবজেক্ট করুন। প্রতিটি যোদ্ধা, বুদ্ধিজীবীর নাম তারা মুখস্থ করবে। কোনো নীতি যেন তাদের জয় বাংলা থেকে স্বাধীন বাংলা থেকে সরিয়ে দিতে না পারে। তিনি বলেন, মাাদ্রাসা শিক্ষাকে সুপারভিশনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তাদের অর্থনৈতিক লেনদেন অডিটের আওতায় আনা প্রয়োজন। এ সময় বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী আলবদর-প্রধান মুজাহিদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হয়েছে। কীভাবে এই নেত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাব, জানি না। প্রতিটি মানুষ আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।

সর্বশেষ খবর