শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
মুক্তিবাহিনী ছিল অসাধারণ

যুদ্ধের গল্প মিত্রবাহিনীর যোদ্ধাদের

—মেজর জেনারেল রাজেন্দ্র নাথ (অব.)

যুদ্ধের গল্প মিত্রবাহিনীর যোদ্ধাদের

বাংলাদেশের আমন্ত্রণে এবারের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভারত থেকে আসেন ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া মিত্রবাহিনীর ২৭ জন বীর যোদ্ধা। সপরিবারে সফররত এই সাহসী যোদ্ধাদের মধ্যে চারজন গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন। পাঠকদের কাছে তা তুলে ধরেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক জিন্নাতুন নূর

মিত্রবাহিনীর সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ (৮৯) যোদ্ধা হচ্ছেন মেজর জেনারেল রাজেন্দ্রনাথ (অব.)। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর সীমান্তের কাছে অবস্থান করছিলেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অংশগ্রহণের ইচ্ছা ছিল না। আমরা যুদ্ধ থামানোর জন্য পাকিস্তানকে বলেছিলাম। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী আমাদের কথার গুরুত্ব দেয়নি। তিনি বলেন, একটি দেশের মানুষদের নিজ দেশেই এভাবে নির্যাতন ও অত্যাচারের শিকার হতে হবে এটি মেনে নেওয়া যায় না। এ জন্য একাত্তর সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ওপর আমাদের অনেকটা জোর করেই আক্রমণ চালাতে হয়েছিল। তবে এ যুদ্ধ এত সহজ ছিল না। পাকিস্তানিদের ওপর আক্রমণ চালাতে আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল। আমাদের পাশেই ছিল চীন, মনে আশঙ্কা ছিল তারা হয়তো পাকিস্তানিদের সাহায্য করতে পারে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সে সময় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে ভাগ্য সহায় ছিল। রাশিয়া সে সময় এ যুদ্ধে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছিল। তবে এ কথা বলতেই হবে যে, মুক্তিবাহিনীর ছেলেরা যুদ্ধে যে ভূমিকা পালন করেছিল তা ছিল অসাধারণ। তারা ভারতীয় মিত্রবাহিনীকে নানাভাবে সাহায্য করেছিল। আমি যুদ্ধের আট মাসই বর্ডারে ছিলাম। পাকিস্তানিদের ওপর আক্রমণ চালাতে অপেক্ষায় ছিলাম। আমি লক্ষ্য করেছিলাম মুক্তিবাহিনীতে যে তরুণ ছেলেরা যোগ দিচ্ছে তাদের চোখেমুখে প্রতিশোধের আগুন। নিজের প্রিয়জন ও মাতৃভূমি হারানোর কষ্ট তাদের যুদ্ধে অংশগ্রহণের উত্সাহকে আরও তীব্র করে তুলছিল। আমি বাংলাদেশ সরকারকে আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানাই। রাজেন্দ্রনাথ বলেন, বাংলাদেশ সরকার আমাদের যে সম্মান দিয়েছে তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এত বছর পর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে ’৭১-এর স্মৃতি স্মরণ করে আমরা সত্যিই শিহরিত।

সর্বশেষ খবর