শিরোনাম
সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ

নেপথ্যে টেন্ডার ভিসি প্রো-ভিসির দ্বন্দ্ব

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের নেপথ্যে রয়েছে টেন্ডার আর ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার ও প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব। ইবি ছাত্রলীগে গ্রুপিং থাকলেও এতদিন তা ছিল নিজেদের মধ্যে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ কোটি টাকার টেন্ডার আর ভিসি ও প্রো-ভিসির দ্বন্দ্বে তা প্রকাশ্য রূপ ধারণ করায় দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ভিসি এবং প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার ও প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমানের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল। প্রো-ভিসি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় ক্যাম্পাসের কতিপয় শিক্ষককে একত্র করে তিনি ভিসির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তকে ওভারলুক করার চেষ্টা করে আসছেন। আর ভিসি চাচ্ছিলেন সম্মিলিত সিদ্ধান্তে দলীয় লোকদের নিয়ে কাজ করতে। মূলত সেখান থেকেই তাদের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের সূত্রপাত। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে আবারও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে, নিয়োগে হস্তক্ষেপ ও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে প্রো-ভিসি ছাত্রলীগের সহসভাপতি গ্রুপকে নিজের পক্ষে দাঁড় করান। বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন প্রো-ভিসি। কিন্তু তিনি কমিটি থেকে সরে যাওয়ার জন্য ভিসি বরাবর আবেদন করেন। ভিসিকে বেকায়দায় ফেলতে তিনি এই কমিটি থেকে সরে পড়তে চাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সহসভাপতি মিজানুর রহমান মিজু গ্রুপের জুয়েল রানা হালিমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা ভিসির কাছে পরিসংখ্যান বিভাগের নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রশাসন ভবনে হট্টগোল শুরু করে। এসময় সভাপতি সাইফুল ইসলাম গ্রুপের কর্মীরা ভিসির পক্ষ নিয়ে প্রশাসন ভবনে এলে উভয়পক্ষের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এরই জের ধরে শনিবার ছাত্রলীগের সভাপতি ও সহ-সভাপতি গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষক নিয়োগে হস্তক্ষেপ করতে ভিসি ও প্রো-ভিসি ছাত্রলীগকে দুগ্রুপে বিভক্ত করেছেন। যার চূড়ান্ত পরিণতি এই সংঘর্ষের ঘটনা। এ ব্যাপারে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘ভিসি স্যারের সঙ্গে আমার কোনো দ্বন্দ্ব বা মনোমালিন্য নেই। তবে আধিপত্য বিস্তার ও টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে গ্রুপিং হতে পারে। আমি  টেন্ডার কমিটি থেকে সরে এসেছি। ফলে কোনো গ্রুপের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই।’ অন্যদিকে ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কারও সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আমি চাই সবাইকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সুন্দরভাবে চালাতে। আর এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

সর্বশেষ খবর