মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ-যুবলীগ সংঘর্ষে নিহত ১

সোনারগাঁ

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

মেঘনা নদীর বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা নদী-তীরবর্তী চরহোগলা গ্রামে গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুপক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন  নিহত ও তিনজন নিখোঁজসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের মেঘনা নদী-তীরবর্তী চরহোগলা গ্রামে মেঘনা নদীর বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে একই ওয়ার্ডের যুবলীগ সভাপতি হারুন অর রশিদের প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা নাসিরউদ্দিনের নেতৃত্বে তার সমর্থক জানে আলম, খোকন মিয়া, মোসলেম মিয়া, সোহেল মিয়াসহ ৪০/৫০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী পিস্তল, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, শাবলসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যুবলীগ নেতা হারুন অর রশিদের সমর্থকদের ওপর গুলি চালায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ যুবলীগ কর্মী জামাল হোসেন (৩২) নিহত হন এবং সুমন মিয়া (৩৩), আলমগীর হোসেন (৩৫) ও সাইফুল ইসলাম (২৮) গুলিবিদ্ধ হন। নিহত জামাল হোসেন চরহোগলা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে। এ সময় তাওলাদ হোসেন, ফারুক মিয়া, ইলিয়াস মিয়া, সুমন মিয়া, সাইফুল ইসলাম, রুহুল আমিন, পিন্টু মিয়া, ইলিয়াস মিয়া, সুমন মিয়া, আলমগীর হোসেন, নাসিরউদ্দিন, ফারুক মিয়া, নবীল হোসেন, রাজিব মিয়া, কায়সার মিয়াসহ কমপক্ষে পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করে ১০টি ঘরবাড়ি ও ৮টি দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় তারা। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আহতদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার পর থেকে সুমন মিয়া, আলমগীর হোসেন ও সাইফুল ইসলাম নিখোঁজ রয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা হারুন অর রশিদ জানান, ‘বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নেতা নাসিরউদ্দিনের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে গুলি করে আমার এক সমর্থককে হত্যা করেছে এবং তিন কর্মীকে হত্যার পর লাশ গুম করে রেখেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমার সমর্থকদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে।’ অপর দিকে আওয়ামী লীগ নেতা নাসিরউদ্দিন জানান, এ ঘটনার সঙ্গে তার কর্মীরা জড়িত থাকলেও তিনি ঘটনার সময় এলাকায় ছিলেন না। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের জানান, সংঘর্ষে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। গুলিবিদ্ধ অপর তিনজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সর্বশেষ খবর