বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রস্তুত ইসি, অপেক্ষা শুধু ভোটের

চার দিন মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

গোলাম রাব্বানী

প্রস্তুত ইসি, অপেক্ষা শুধু ভোটের

পৌরসভা নির্বাচনের আর বাকি সাত দিন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। অপেক্ষা শুধু ভোটের। সুই-সুতা থেকে শুরু করে সব নির্বাচনী মালামাল সংগ্রহ শেষ হয়েছে। চলছে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ। যদিও আগেই কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যালট ছাপানোর কাজ এগিয়ে রেখেছিল ইসি। একইভাবে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও হয়েছে। মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত পদের জন্য প্রায় ২ কোটি ১০ লাখের বেশি ব্যালট পেপার ছাপাবে ইসি।

এদিকে, ভোটের আগে-পরে ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর চার দিনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবে। ইতিমধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি দেখভালে ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। প্রতিনিয়তই তারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অ্যাকশন নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে ইসি।

পৌর নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন হচ্ছে না। তবে বিজিবির সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন। পুলিশ, আনসার-ভিডিপি ও ব্যাটালিয়ন আনসার থাকবে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায়। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি, র‌্যাব, এপিবিএন, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩২ পৌরসভা নির্বাচনে ২০টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মেয়র পদে ৯২৩ প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে  রয়েছে ১১ হাজারের বেশি। সাড়ে তিন হাজার ভোটকেন্দ্রের এসব পৌরসভায় ভোটার রয়েছে প্রায় ৭১ লাখ। এদিকে, অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এনপিপি পৌরসভায় সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা মোতায়েন না চাইলেও সিইসির সঙ্গে  বৈঠকের পর ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ভোটারদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে যা দরকার তা করতে হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, পৌর ভোটে সেনা মোতায়েনের দরকার পড়বে না। কেউ চাইলে তো হবে না। এ বিষয়টি ভেবেচিন্তে করতে হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, সাধারণ ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৯ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ৮ জন সশস্ত্র পুলিশসহ মোট ২০ জন সদস্য মোতায়েন রাখা হবে। বিধি লঙ্ঘনের বিচারের জন্য নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োজিত রয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনী এলাকায় চিহ্নিত অপরাধী, চাঁদাবাজ, মাস্তান, অস্ত্রবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানও চলছে। জানা গেছে, গতকালের মধ্যে মেয়র প্রার্থীদের ব্যালট পেপার ছাপানো শেষ করার কর্মপরিকল্পনা থাকলেও আরও দু-একদিন সময় লাগতে পারে। নতুন নতুন প্রার্থী যোগ হওয়ায় ব্যালট ছাপানোর জটিলতায় পড়েছে ইসি। এ জন্য বেশ কিছু প্রার্থীর প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার বিষয়ে আইনি লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, প্রার্থী তালিকা বেড়েছে। এ জন্য ব্যালটসহ অনেক বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা আইনি লড়াই করব। ইসি কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে ১৪ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর মেয়র প্রার্থীদের ব্যালট পেপার ছাপানো শুরু হয়। ২৩২ পৌরসভার সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের বেশির ভাগ ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। মেয়র পদের ব্যালট পেপার ছাপানো চলছে। তবে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কিছু পৌরসভার ব্যালট পেপার ছাপানো বন্ধ রয়েছে। ইসির আইন শাখা জানায়, এ পর্যন্ত ১৯৪ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

এদিকে, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি একটি ওয়ার্ডে পথসভার জন্য একটি এবং নির্বাচনী প্রচারণার জন্য একটি মোট দুটি মাইক্রোফোন বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন। নির্বাচনে যে কোনো ধরনের মিছিল বা শোডাউন নিষিদ্ধ। প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কেউ যে কোনো প্রকারের মিছিল বা মশাল মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না। পথসভা বা ঘরোয়া সভা ছাড়া কোনো সভা করা যাবে না। তবে ঘরোয়া সভা করতে হলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে অবহিত করতে হবে। আর পথসভা এমনভাবে করা যাবে না, যাতে জনসাধারণের চলাচলে অসুবিধা হয়। এ ছাড়া অন্য প্রার্থী কোনো পথসভা বা ঘরোয়া সভায় বাধা দিতে পারবে না।

গফরগাঁও পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পৌরসভা নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায়। পৌরসভার মধ্যে গফরগাঁও ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে এ রিট করা হয়।

সর্বশেষ খবর