এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেছেন, বিনিয়োগের জন্য ২০১৫ সাল ছিল বাংলাদেশের টার্নিং বছর। এ বছরে জ্বালানি অবকাঠামো খাতে বিপুল উন্নয়ন হয়েছে। গ্যাসের ঘাটতি সত্ত্বেও বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে আমাদের এখন ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। এটা দিয়ে বিদ্যুেকন্দ্রিক শিল্প গড়ে উঠবে। বিদ্যুিনর্ভর শিল্প স্থাপনে সব উদ্যোক্তারাই আগ্রহী হচ্ছেন। আর এসব উন্নয়নের কারণে ২০১৬ হবে বিনিয়োগের সোনালি বছর। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এফসিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের দেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছে। বিশেষ করে জাপানি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে আসছেন। তারা আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন দেখে শিল্প স্থাপনের আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তিনি উল্লেখ করেন, শিল্পায়নের বড় বাধা ছিল জ্বালানি। এ সংকটের কারণের দেশি-বিদেশি কোনো উদ্যোক্তাই বিনিয়োগ করতে পারেননি। সে বাধা আমরা কাটিয়ে উঠেছি। আমাদের গ্যাস নেই, এটা মেনে নিয়েই শিল্পায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, শিল্পায়নের জন্য দ্বিতীয় বাধা হিসেবে ছিল ব্যাংক ঋণের সুদের অতিরিক্ত হার। উদ্যোক্তাদের ১৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিতে হয়েছে। পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ বিপরীত। সুদের হার এখন ১০ শতাংশে চলে এসেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিঙ্গেল ডিজিটে নেমেছে। ফলে বিনিয়োগে মূল বাধা কেটে গেছে। মাতলুব আহমাদ বলেন, বিনিয়োগকারীদের জন্য কয়েকটি অর্থনৈতিক এলাকা বা শিল্পাঞ্চল তৈরি হচ্ছে। এসব শিল্পাঞ্চলের সুযোগ-সুবিধা আন্তর্জাতিক মানের। পদ্মা সেতু, ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কসহ বড় বড় অবকাঠামো বিদেশিদের আকৃষ্ট করছে। বিদেশিরা বাংলাদেশে এসে যে পরিবেশ দেখছেন তাতে তারা অভিভূত। এমন একটি দেশে সবাই বিনিয়োগ করতে চাইবেন। এরই মধ্যে জাপানের একাধিক শিল্পগ্রুপ বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। তাদের চাহিদা মতো সরকার সব সুবিধা দিচ্ছে। শুধু জাপান নয় ইউরোপ, চীন, কম্পোডিয়া, থাইল্যান্ডের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশ আসছেন। যে পরিমাণ বিনিয়োগ পাইপ লাইনে আছে— তাতে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশে কয়েক লাখ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আর্থিক সক্ষমতা। ব্যাংকের কাছে প্রচুর টাকা আছে। বিনিয়োগের জন্য সব ব্যাংক বসে আছে। বহু নতুন খাত তৈরি হয়েছে। এসব খাতে নতুন উদ্যোক্তারা আসছেন। কৃষি নির্ভরতা থেকে অনেক আগেই আমরা বের হয়েছি। আগামীতে পুরো অর্থনীতি শিল্পনির্ভর হবে। অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে— তাতে শিল্পায়নের সব খাতেই আমরা সফলতা নিয়ে আসতে পারব।