বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আকাশসীমায় বিমান বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আকাশসীমার নিরাপত্তায় সদা সতর্ক নজরদারি বজায় রাখতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনারা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির সুরক্ষার জন্য পবিত্র দায়িত্ব পালনকারীদের অংশীদার। আশা করি মহান মুক্তিযুদ্ধের ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দেশের আকাশসীমা মুক্ত রাখার জন্য সদা সতর্ক থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন কমিশনপ্রাপ্ত বিএএফ অফিসাররা দেশের সুরক্ষায় এক মহান অংশীদার। তিনি দেশের আকাশসীমা মুক্ত রাখার জন্য সদা সতর্ক থাকতে তাদের নির্দেশ দেন। খবর বাসসের।

যশোরে গতকাল সকালে বিএএফ প্যারেড  গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর (বিএএফ) ৭২ ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্স (এফসিসি) এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি ২০১৫/বি অফিসার ক্যাডেট কোর্সের শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, নতুন কমিশনপ্রাপ্ত অফিসাররা বিমান বাহিনী একাডেমি থেকে যে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন তা অনুশীলন এবং পেশাগত উন্নয়ন অব্যাহত রাখবেন। যে কোনো চ্যালেঞ্জকে একটি সুযোগে পরিণত করতে হবে এবং ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে তা প্রয়োগ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, তারা হবেন বিমান বাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতা। তাদের বিমান বাহিনীর সক্ষম উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য সততা, আন্তরিকতার  কোনো বিকল্প  নেই। আমি আশা করি নতুন প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জন করার মাধ্যমে বিমান বাহিনীর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবেন। প্রধানমন্ত্রী ফ্লাইং ব্যাজ অর্জনকারী দুজন মহিলা পাইলটকে অভিনন্দন জানান। দেশের নারীরা সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬-২০০১ সালে আমরা বিমান বাহিনীতে চতুর্থ প্রজন্মের অত্যাধুনিক মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান, সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার সংযোজন করেছিলাম। এ ছাড়া ‘ফোর্সেস  গোল-২০৩০’ অনুযায়ী আমরা সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর উন্নয়ন করে যাচ্ছি। বিমান ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু ও কক্সবাজারকে পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটি হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা, উদ্ধার তত্পরতা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণে কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্ব প্রশংসা কুড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর পরই সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু একটি দক্ষ ও চৌকস বিমান বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিমান বাহিনীকে একটি শক্তিশালী ও মর্যাদা সম্পন্ন বাহিনীতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছি। এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে প্যারেড পরিদর্শন এবং মার্চপাস্ট অনুষ্ঠানে সালাম গ্রহণ করেন। তিনি ফ্লাইট ক্যাডেটদের মধ্যে ট্রফি, সনদপত্র এবং ফ্লাইং বেজ প্রদান করেন। ফ্লাইট ক্যাডেট একাডেমি আন্ডার অফিসার মো. আবু হাসান মেহেদি কুচকাওয়াজ পরিচালনা করেন। পরে বিমান বাহিনীর কয়েকটি বিমান চমৎকার ফ্লাইপাস্ট প্রদর্শন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছলে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার ও বিএএফ একাডেমির কমান্ডেন্ট এয়ার কমোডর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম তাকে স্বাগত জানান। মন্ত্রীবর্গ, সংসদ সদস্য, সেনাবাহিনী প্রধান ও নৌবাহিনী প্রধান, কূটনীতিক, উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা, এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং ফ্লাইট ক্যাডেটদের অভিভাবকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে ৭২ ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্সের ৪৩ জন ফ্লাইট ক্যাডেট, ডাইরেক্ট এন্ট্রি ২০১৫/বি অফিসার ক্যাডেট কোর্সের ৩২ জন অফিসার ক্যাডেটসহ ৭৫ জন ফ্লাইট ক্যাডেট কমিশন লাভ করেছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন মহিলা। ফ্লাইট ক্যাডেট আন্ডার অফিসার মো. আবু হাসান মেহেদিকে ৭২ ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্সের সেরা হওয়ার জন্য ‘সোর্ড অব অনার’ এবং জেনারেল সার্ভিস ট্রেনিংয়ে সেরা হওয়ার জন্য ‘কমান্ডেন্ট ট্রফি’ প্রদান করা হয়। ফ্লাইট ক্যাডেট মুহাম্মদ শাদমান আলী ফ্লাইং একাডেমিতে সেরা হওয়ার জন্য ‘বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ট্রফি’ এবং ফ্লাইট ক্যাডেট মশিউর রহমান গ্রাউন্ড ব্যাচে সেরা হওয়ার জন্য ‘বিমান বাহিনী প্রধান ট্রফি’ লাভ করেন। ফ্লাইং অফিসার সাদিয়া বিনতে সিদ্দিক এবং মিথিলা  রোয়াজা ফ্লাইং ট্রেনিং কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য ফ্লাইং ব্যাজ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

সর্বশেষ খবর