বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ফের আওয়ামী লীগের আধিপত্য নাকি পরিবর্তন?

সিলেট

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ফের আওয়ামী লীগের আধিপত্য নাকি পরিবর্তন?

আজকের ভোটযুদ্ধে সিলেটের তিন পৌরসভায় কী ফলাফল আসবে, তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এসব পৌরসভায় গত নির্বাচনে একক আধিপত্য ছিল আওয়ামী লীগের। গত পৌর নির্বাচন দলীয়ভাবে না হলেও সেবার আওয়ামী লীগ নেতারাই নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিলেন। এবার প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে হওয়া পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আধিপত্য বজায় থাকবে, নাকি পরিবর্তনের হাওয়া বইবে— এ নিয়ে এখন চলছে নানা বিশ্লেষণ।

আজ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিলেটের গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট পৌরসভায়। এ তিন পৌরসভায় মেয়র পদে লড়ছেন ২১ প্রার্থী। গত পৌর নির্বাচনে এ তিন পৌরসভায় আওয়ামী লীগ দলীয় নেতারা বিজয়ী হয়েছিলেন। তবে গত বছর জকিগঞ্জের মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন সানাউল্লাহর মৃত্যুতে পদটি শূন্য হলে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দলীয় কোনো প্রার্থী না থাকায় বিজয়ী হন পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি আবদুল মালেক ফারুক। জকিগঞ্জে এবার আওয়ামী লীগের ব্যানারে নির্বাচনে লড়ছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খলিলুর রহমান। দলীয় প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন ফারুক আহমদ। বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় এ পৌরসভায় মেয়রের চেয়ার ধরে রাখা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে আওয়ামী লীগে। তবে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বদরুল হক বাদল তেমন শক্তিশালী অবস্থানে না থাকায় আধিপত্য ধরে রাখার আশাও করছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিএনপি নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, ‘সরকারের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ’ মানুষ বিএনপির প্রার্থীকেই ভোট দেবে। এ পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে রয়েছেন আল ইসলাহর প্রার্থী হিফজুর রহমানও।

কানাইঘাট পৌরসভায় নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক ও বর্তমান মেয়র লুত্ফুর রহমান। তাকে চ্যালেঞ্জ করে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করছেন নিজাম উদ্দিন আল মিজান। বিদ্রোহ থাকায় এবার আধিপত্য বজায় রাখতে আওয়ামী লীগকে হিমশিম খেতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া সিলেটের তিন পৌরসভার মধ্যে একমাত্র কানাইঘাটেই জামায়াতের এক নেতা নির্বাচনে লড়ছেন। স্বতন্ত্রের ব্যানারে জামায়াতের ওলিউল্লাহ মাঠে থাকায় দলটি এ পৌরসভাতে জয় পেতে মরিয়া। এখানে বিএনপির প্রার্থী আবদুর রহিম ভরসার পক্ষে নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামায় তিনিও চমক দেখাতে পারেন।

এদিকে গোলাপগঞ্জে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাকারিয়া আহমদ পাপলু এবার ঘরের দুই ‘শত্রুকে’ মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে আছেন সিরাজুল জব্বার চৌধুরী ও আমিনুল ইসলাম রাবেল। কোনো কোনো পর্যবেক্ষকের ধারণা, আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী থাকায় এবার প্রতিপক্ষ এ পৌরসভায় সুযোগের সদ্ব্যবহার করবে। ভোটের মাঠে অবশ্য সিরাজুল জব্বারও এগিয়ে রয়েছেন। দলের একটি বিরাট অংশ তার পক্ষে প্রচারণায় থাকায় মাঠ কাঁপাতে পারেন তিনিও। অন্যদিকে বিএনপির গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন নির্বাচনের আগ মুহূর্তে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তার পক্ষে জেলা ও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিভেদ ভুলে মাঠে নামায় তিনিও রয়েছেন মেয়রের চেয়ার দখলের লড়াইয়ে।

সর্বশেষ খবর