বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মেয়র পদে লড়বেন ১৬ নারী প্রার্থী

জিন্নাতুন নূর

আজ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দেশের ১৫টি পৌরসভায় ১৬ জন নারী প্রার্থী সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, এবারের নির্বাচনে ২০ জন নারী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে মেয়র পদের জন্য ৯২৮ জন  পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে আজ ১৭ জন নারী নির্বাচনী মাঠে লড়াই করবেন। ১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের আটজন, বিএনপির একজন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) পাঁচজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তিনজন। এ ছাড়া প্রতিটি পৌরসভায়ই সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে এক হাজারের বেশি নারী লড়ছেন। আর কাউন্সিলর পদে সরাসরি নির্বাচন করছেন অর্ধশতাধিকের বেশি নারী। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মেয়র পদে পুরুষের তুলনায় নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণ অনেক কম। অথচ আগে তৃণমূলের নারীরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তুলনামূলক বেশি অংশগ্রহণ করতেন। কিন্তু এখন রাজনৈতিক পরিবেশ এমন প্রতিকূল পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মেয়েদের পরিবার থেকে রাজনীতিতে আসার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়। কারণ তাদের নিরাপত্তা নিয়ে পরিবারগুলো শঙ্কিত থাকে। এ জন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, যদিও তৃণমূলের নারীরা আগের চেয়ে বেশি সচেতন। কিন্তু তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। আমি মনে করি নির্বাচন কমিশনসহ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে নারীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরও বৃহৎ পরিসরে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করার জন্য কাজ করতে হবে। দেশের ১৫টি পৌরসভায় মেয়র পদে যেসব নারী প্রার্থী লড়ছেন তারা হলেন— রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভায় এনপিপির মোছা. শামীম আরা বেগম, কুমিল্লার লাকসামে বিএনপির শাহনাজ আক্তার, পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এনপিপির রাবেয়া খাতুন, নরসিংদীতে এনপিপির ফারজানা আক্তার, পঞ্চগড়ে আওয়ামী লীগের জাকিয়া খাতুন, ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের তহমিনা আখতার মোল্লা, রাজশাহীর চারঘাটে আওয়ামী লীগের নার্গিছ খাতুন, নাটোরে গোপালপুরে আওয়ামী লীগের রোকসানা মোর্ত্তজা লিলি, নাটোরে আওয়ামী লীগের উমা চৌধুরী, সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে আওয়ামী লীগের আশানুর বিশ্বাস, নারায়ণগঞ্জের তারাবতে আওয়ামী লীগের হাসিনা গাজী, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে এনপিপির খালেদা বেগম, নড়াইলের কালিয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহিলি পারভিন নিরী, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় এনপিপির মোছা. রেক্সোনা পারভীন, কুষ্টিয়ার মিরপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসরিন বেগম, শরীয়তপুরে ভেদরগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থী তানিয়া বেগম। কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার বিএনপির একমাত্র প্রার্থী শাহনাজ আক্তার গতকাল বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি, রাতে (গতকাল) এই এলাকায় ব্যালট কারচুপির ঘটনা ঘটবে। এ ছাড়া বাইরে থেকে এখানে সন্ত্রাসী আনা হচ্ছে। তবে এই প্রার্থী জানান, সারা দেশে এবার তিনি বিএনপি থেকে মনোনীত একমাত্র নারী মেয়র প্রার্থী। যদি নির্বাচিত হন তবে এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়নসহ অন্যান্য কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। ঠাকুরগাঁও পৌরসভার আওয়ামী লীগ প্রার্থী তহমিনা আখতার মোল্লা এই প্রতিবেদককে বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। এখন পর্যন্ত ভোটারদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি। যদি নির্বাচিত হই তবে ঠাকুরগাঁও পৌরসভাকে মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত করব। তবে এই নির্বাচনে কম সংখ্যক নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, যদিও নারী প্রার্থীর সংখ্যা কম। কিন্তু বিষয়টিকে আমি মন্দের ভালো হিসেবে দেখছি। এই নারীদের মধ্যে যারা নির্বাচিত হবেন তারা অন্য নারীদেরও পরবর্তীতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করবেন। এর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে।  শরীয়তপুরে ভেদরগঞ্জ পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী তানিয়া বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি প্রচারণা চালাতে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের রোষানলের শিকার হচ্ছি। তারা আমাকে এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না। আমার পোস্টারও ছিঁড়ে ফেলেছে। তবে ভোটারদের কাছ থেকে ভালো সমর্থন পেয়েছি। আমার এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবেসে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। নির্বাচিত হলে গরিবদের পাশে থাকব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর