বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

খালেদার বাসভবন ঘেরাওয়ের চেষ্টা

পুলিশি বাধার মুখে দুই ঘণ্টা অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদার বাসভবন ঘেরাওয়ের চেষ্টা

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ঘেরাওয়ের চেষ্টায় গতকাল বাধা দেয় পুলিশ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যের প্রতিবাদে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ সরকার-সমর্থক কয়েকটি সংগঠন। গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বরে গতকাল সকাল সোয়া ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা। ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ছাড়াও এর মধ্যে ছিল আমরা গর্বিত বাঙালি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তান ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বে কয়েক শ লোক এতে অংশ নেন। এ ছাড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মানবতাবিরোধী অপরাধের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট তুরিন আফরোজ, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী প্রমুখ এতে উপস্থিত ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রাখেন এবং গোলচত্বর থেকে উত্তর দিকে খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে পর্যন্ত সতর্ক অবস্থান নেন। এমনকি বিক্ষোভকারীরা দুপুরে চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যা পর্যন্তও তাদের এই সতর্ক অবস্থান অব্যাহত ছিল। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ও তার রাজনৈতিক কার্যালয় দুটোরই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের বাসভবন অভিমুখে রওনা হলে পুলিশ তাদের গোলচত্বরেই বাধা দেয়। পরে সেখানে অবস্থান নিয়েই তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যে মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননার অভিযোগ এনে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে বিচারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শাহরিয়ার কবির সংক্ষিপ্ত এক বক্তৃতায় বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে গেলাম। কূটনৈতিক জোন হওয়ায় আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই। তবে এ অপরাধের জন্য খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে বিচার করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেন ভবিষ্যতে আর কেউ কোনো কটূক্তি করতে না পারে সে জন্য ‘মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন’ ও ট্রাইব্যুনাল করারও দাবি জানান তিনি। এর আগে ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী সাংবাদিকদের বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যা, তা মাত্র একটি কথায় প্রমাণ করেছেন তিনি। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিন তিনি কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা উচিত। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা এবং একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করার প্রতিবাদে বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতেই উল্লিখিত সংগঠনগুলো গতকাল এ কর্মসূচি পালন করে।

সর্বশেষ খবর