শিরোনাম
রবিবার, ৩ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

তেল-গ্যাস ব্লক পাবে না একক কোম্পানি

সমুদ্র সম্পদ আহরণে কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

বিদেশি কোম্পানিগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা ঠেকাতে সমুদ্রে তেল-গ্যাস ব্লক কোনো একক কোম্পানিকে আর দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ নির্দেশনা মেনেই বঙ্গোপসাগরে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে কোম্পানি নির্বাচন করা হবে বলে জানিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশের অর্জিত সমুদ্রসীমায় সমন্বিত জরিপ ও তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

এ ছাড়া বহুজাতিক কোম্পানিকে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আকৃষ্ট করতে উত্পাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) সংশোধন করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরির জন্য পিএসসি সংশোধন করে উত্পাদিত গ্যাসের দর বৃদ্ধি করা হবে। চলতি মাসের মধ্যে পিএসসির সংশোধনী চূড়ান্ত হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি পর্যবেক্ষণমূলক প্রতিবেদন পাঠানো হবে। সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতি থেকে নিরাপদে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্পদ আহরণে নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা এক মাসের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে। সম্প্রতি ওই বৈঠকের কার্যবিবরণী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কার্যবিবরণীর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ব্লু ইকোনমি সংক্রান্ত বৈঠকে যে ১৮ সুপারিশ গৃহীত হয়েছিল সেগুলো স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। ওই সুপারিশমালা অনুসরণ করেই যাতে মন্ত্রণালয়গুলো নিজেদের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণ করে সে ব্যাপারেও গুরুত্ব দেওয়া হয় বৈঠকে। সমুদ্র সম্পদ আহরণে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেওয়া উল্লেখযোগ্য সুপারিশ ছিল— সমুদ্রের কোন কোন এলাকায় কী কী খনিজ সম্পদ, মূল্যবান সম্পদ রয়েছে তা দ্রুত জরিপ করার লক্ষ্যে নিজস্ব জাহাজের পাশাপাশি প্রয়োজনে ভাড়ায় জাহাজ সংগ্রহের পদক্ষেপ নেওয়া হবে; সমুদ্রের মত্স্য সম্পদ আহরণে একই পদ্ধতিতে জরিপ চালাবে মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়; সমুদ্র ও নদীর মোহনায় জেগে ওঠা নতুর চরে বনায়ন কর্মসূচি জোরদার এবং চর রক্ষা ও ভূমি পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নেবে পানিসম্পদ বিভাগ; সন্দ্বীপ এলাকায় ক্রস ড্যাম নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করবে একই মন্ত্রণালয়; বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এই চার দেশের সঙ্গে উপকূলীয় জাহাজ চলাচল ও পর্যটন যোগাযোগ গড়ে তুলতে কাজ করবে নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়; সড়কের ওপর চাপ কমাতে সমুদ্রবন্দর থেকে নৌপথে কনটেইনার পরিবহন বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে একই মন্ত্রণালয় এবং দেশের সমুদ্র সীমায় বিদেশি ট্রলার বা জাহাজের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, শিল্প ও মত্স্য মন্ত্রণালয় মনিটরিং ও সার্ভেল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করবে।

সর্বশেষ খবর