শিরোনাম
শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
ছাত্ররাজনীতি

ঘুরে দাঁড়ানোর আশা নতুন কমিটি করে

অস্তিত্ব সংকটে ছাত্রদল

ফরহাদ উদ্দীন

বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত একসময়কার বৃহত্ ও প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, পরে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলন, ১/১১-এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের  নানা আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে সংগঠনটি। কিন্তু বর্তমানে এ সংগঠনটির অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। অযোগ্য ও অছাত্রদের দিয়ে কমিটি গঠন, চরম অভ্যন্তরীণ কোন্দল, যথাসময়ে কমিটি না হওয়াসহ নানা কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। ফলে বিএনপির সর্বশেষ দুই দফা সরকারবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থতার পরিচয় দেয় ছাত্রদল। বছরের পর বছর কর্মসূচি ও রাজপথে না থাকায় ইতিমধ্যে ভেঙে পড়েছে জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া এ সংগঠনটির সাংগঠনিক কাঠামো। তবে অতীত ঐতিহ্য ফিরে পেতে ঘুরে দাঁড়াতে চায় সংগঠনটি। এ জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে তরুণদের নিয়ে শিগগিরই আসছে ছাত্রদলের নতুন কমিটি। একই সঙ্গে ঘোষণা করা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিটও। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

পাঁচ বছর ধরে ছাত্র রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেতে পারে না ছাত্রদল। ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ছাত্রলীগের আক্রমণের শিকার হওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসছাড়া হয় সংগঠনটি। পরে সংগঠনে গতি আনতে ২০১২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মহিদুল হাসান হিরুকে সভাপতি ও মাসুদ পারভেজকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাবি শাখার কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এ কমিটিও ক্যাম্পাসে আসতে ব্যর্থ হয়। হিরু-মাসুদ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগে। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজীব আহসানকে সভাপতি ও মো. আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৩ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হলেও গঠিত হয়নি ঢাবি শাখার কমিটি। জানা যায়, ছাত্রদলের দুই সিন্ডিকেটের দ্বন্দ্বের কারণে আটকে আছে ঢাবি শাখা কমিটি। একটি সিন্ডিকেট চায় আহ্বায়ক কমিটি এবং অন্যটি চায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটি। দুই সিন্ডিকেটের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় নেতৃত্বশূন্য রয়েছে ঢাবি শাখা। এ ছাড়া ঢাবি ছাত্রদলের কমিটি না হওয়ায় প্রায় সব কিছু চূড়ান্ত হয়েও আলোর মুখ দেখছে না ঢাকা মহানগর, জবিসহ বিভিন্ন জেলা কমিটি। এদিকে নেতৃত্বে নতুন গতি আনতে দীর্ঘ ১১ বছর পর গঠিত হবে ঢাবির বিভিন্ন হল শাখার কমিটি। সর্বশেষ ২০০৪ সালে হল কমিটি গঠিত হয়েছিল। সার্বিক বিষয়ে ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা মিছিল-মিটিং তো দূরের কথা প্রকাশ্যে চলাফেরাও করতে পারেন না। রাস্তায় নামলেই পুলিশ বিভিন্ন মামলার আসামি বানিয়ে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে সহ-অবস্থানও নেই।’ তিনি বলেন, ‘সব নির্যাতন উপেক্ষা করে নতুন করে জ্বলে উঠতে চায় ছাত্রদল। এ লক্ষ্যে শিগগিরই ঢাবিসহ বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠন করা হবে। ক্যাম্পাসমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই।’

সর্বশেষ খবর