বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

লজ্জা ঢাকতে চায় জাপা জামায়াত চায় সাফল্য

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভালো করে পৌরসভা নির্বাচনের লজ্জা ঢাকতে চায় প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ২৩৪ পৌরসভায় মাত্র লাঙ্গল প্রতীকের একজন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল। দলটির সাংগঠনিক অবস্থা এতই দুর্বল ছিল যে, দলটি মাত্র ৭৬টি পৌরসভায় মেয়র পদে প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছিল। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভালো করতে ইতিমধ্যে সারা দেশের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক করেছেন এরশাদ। তৃণমূলের সমস্যার কথা শুনেছেন। নির্দেশ দিয়েছেন সব ইউনিয়নে অংশ নিতে। অপরদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী পৌরসভা নির্বাচনের মতোই সাফল্য ধরে রাখতে চায় এ নির্বাচনেও। ২৩৪ পৌরসভায় দুই মেয়র ও ৭০ কাউন্সিলর বিজয়ী হয়েছে জামায়াত সমর্থকরা। একইভাবে পৌর নির্বাচনের মতো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। সাফল্য ধরে রাখতে গ্রামে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত এমন আইনজীবী, চিকিত্সক, প্রকৌশলীদের প্রার্থী করার জন্য জামায়াতের কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

লজ্জা ঢাকতে চায় জাপা : ইউপি নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে জাতীয় পার্টি। এজন্য গত সোমবার সারা দেশের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এরশাদ কথা বলেছেন। পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ায় ইউপি নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক জেলা নেতাদের সব ইউনিয়নে প্রার্থী দেওয়ার জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রত্যেক জেলায় নির্বাচনী মনিটরিং সেল গঠন করার জন্য। কেন্দ্র থেকেও মনিটরিং সেল গঠন করে জেলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রচারণায় অংশ নিবেন। কিন্তু পৌরসভা নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের মনিটরিং বা তাদের সাহায্য করা হয়নি।

জানতে চাইলে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান সাংগঠনিক পরিবর্তন আনায় দলে পরিবর্তন এসেছে। তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে প্রত্যেক ইউনিয়নে প্রার্থী দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রচারণা চালাতে তিনি নিজেও মাঠে যাবেন বলে জানান।  এদিকে পৌরসভা নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মাত্র একটিতে বিজয়ী হওয়ায় এইচ এম এরশাদ বলেন, লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না।

সাফল্য ধরে রাখতে চায় জামায়াত : নির্বাচন কমিশন দলের নিবন্ধন বাতিল করলেও পৌরসভা নির্বাচনে হাল ছাড়েনি জামায়াতে ইসলাম। নিজেদের নির্বাচনী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে নামতে না পারলেও ‘স্বতন্ত্রভাবে’ নীরবে মাঠে থেকে ভোটের ফল ঘরে তুলেছে দলটি। ২৮টি পৌরসভায় জামায়াতের স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দুজন বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া শতাধিক পৌরসভায় প্রার্থী দিয়ে সাধারণ কাউন্সিলর ৫৩ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ১৭জন বিজয়ী হয়েছেন। জামায়াতের দায়িত্বশীলরা বলছেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ইউপি নির্বাচনে অংশ নেবে। দলটির কৌশল ‘নীরবতা’। পৌরসভা নির্বাচনে ভালো করায় আশাবাদী হয়ে উঠছে মাঠের নেতা-কর্মীরা। তারা বলছেন, বিভিন্ন মামলায় নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়সহ নানা কারণে দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে দলীয় কার্যক্রম চালাতে পারছে না জামায়াত। দলের প্রায় সব শীর্ষ নেতা কারাগারে আটক। প্রকাশ্যে বেরও হতে পারত না দলটির নেতা-কর্মীরা। এ অবস্থায় দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা ও জনসমর্থন যাচাই করতে আবারও ইউপি নির্বাচনকে মাধ্যম হিসেবে নিচ্ছে জামায়াত। প্রকাশ্যে বের হওয়ার একটি মাধ্যম মনে করে নির্বাচনকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের ঢাকা মহানগর শাখার এক নেতা জানান, দলীয়ভাবে ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেব। তিনি বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আমরা ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছি। ইউপি নির্বাচনে আমরা আরও ভালো করতে পারব বলে আশা করছি।

সর্বশেষ খবর