বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুলিশ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর পুলিশের আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রতন কুমার হালদারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির

অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি। এসআই রতনের বিরুদ্ধে যুবদলের এক নেতার স্ত্রীকে (বেসরকারি আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী) যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলে ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ হয়। যৌন হয়রানির শিকার ওই শিক্ষার্থী মামলা করার পর আদালতের আদেশে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমান তদন্ত শেষে গতকাল ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে এসআই রতনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলে আদালতের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তদন্তে বাদী এবং অন্য চারজনের সাক্ষ্য নিয়েছেন। এর মধ্যে দুজন সাক্ষী নিরপেক্ষ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি ফোরকান মিয়া বলেন, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নেওয়ার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সালেহ উদ্দিন।

গত ৩১ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদের কাছে একটি দোকানে নিয়ে এসআই রতন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ ওঠার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। রতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ডিএমপি এবং পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার পরদিন ওই ছাত্রী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। এর আগে তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার হাবীবুন নবী আনিসুর রশিদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন বিভাগের উপকমিশনারের কাছে জমা দেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, এসআই রতনের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে তার আচরণ ছিল অপেশাদার। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রিকশায় বাসায় ফেরার সময় শিয়া মসজিদের কাছে তাকে আটকান এসআই রতন। এরপর তাকে একটি দোকানের ভিতরে নিয়ে সবাইকে বের করে দিয়ে স্বামীর খোঁজ জানতে তাকে তল্লাশি করা হয়। বার বার মহিলা পুলিশ বা আশপাশের কোনো মহিলার সামনে অথবা থানায় নিয়ে তল্লাশি করার অনুরোধ জানালেও এসআই রতন তা করেননি। এ সময় অশ্লীল কথাবার্তা বলা ছাড়াও তাকে হোটেলের পতিতা এবং ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা করেন। ওই ছাত্রীর স্বামী যুবদল নেতা নাশকতার একটি মামলার আসামি। ওই সময় যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেছিলেন, হঠাত্ দেখা হওয়ায় রিকশা থামিয়ে তার স্বামীর খোঁজ জানতে চেয়েছি, এর বেশি কিছু নয়। স্বামীর মামলার কারণে ওই তরুণী আগে একবার থানায় যাওয়ার পর পরিচয় হয়েছিল বলে জানান এসআই রতন।

সর্বশেষ খবর