শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে আজ থেকে

যাত্রীসেবার মান নিয়ে প্রশ্ন

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

আজ থেকে বাড়ছে বাংলাদেশ রেলওয়ের ভাড়া। রুটভেদে যাত্রী পরিবহনে ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে ৭ থেকে ৯ শতাংশ। একই হারে বেড়েছে রেলপথে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়াও। পাশাপাশি রেলে ভ্রমণের ন্যূনতম ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রী, পার্সেল, মালামাল ও কনটেইনারের ভাড়া এবার তিন বছর পর পুনর্নির্ধারিত হয়েছে। তবে সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা।

বর্ধিত ভাড়ার টিকিট এরই মধ্যে বিক্রি শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন রেলের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আমজাদ হোসেন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যাত্রীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন স্টেশনে নতুন ভাড়ার তালিকাও টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। গড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ছে। কোথাও আবার কমও হচ্ছে। ভাড়া বৃদ্ধির কারণে এবার প্রায় ৪৫ কোটি টাকা আয়ও বাড়ছে গত বছরের তুলনায়। চেষ্টা করছি ধীরে ধীরে লোকসান কমিয়ে আনার। তবে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে ট্রেনে গরিব যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনা করে সাধারণ আসনে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সেবাসহ নানা সার্ভিসের বিষয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’ রেলশ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রেলের ভাড়া বাড়ানো হলেও সে তুলনায় এখনো দৃশ্যমান হয়নি যাত্রীসেবার মান। আশা করছি, সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এতে ভ্রমণে সাধারণ মানুষের আগ্রহ আরও বাড়বে।’ একই কথা জানান চট্টগ্রামের স্টেশন এলাকার শফিউল আজম নামে এক যাত্রী।

এর আগে দুই দফায় ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল এবং সর্বশেষ ৯ ফেব্রুয়ারি রেলভবনের মার্কেটিং শাখার উপ-পরিচালক হোসনে আরা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানা গেছে রেলের এবারের ভাড়া বাড়ার বিষয়টি। একই সঙ্গে এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ভাড়া গণনার নির্ধারিত অনুমোদিত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে সরকারের সম্মতি রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শওকত রশীদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি ‘পরিপত্র’ জারি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) সরদার শাহাদাত আলী বলেন, ‘রেলের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের পাশাপাশি চলমান যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার বিষয়েও কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। এতে আরও কীভাবে যাত্রীদের সেবা দেওয়া যেতে পারে, সেই বিষয়েও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ট্রেন ভ্রমণে দূরত্ব ও শ্রেণিভেদে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। সাধারণ আসনের ভাড়া তুলনামূলক কম। তবে সব মিলিয়ে রেলমন্ত্রী, সচিব ও ডিজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনার পাশাপাশি কঠোর নজরদারি ও মনিটরিং রয়েছে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, নতুন কার্যকর হওয়া ভাড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে শোভন শ্রেণির ভাড়া ২৬৫ থেকে বেড়ে হবে ২৮৫ টাকা। শোভন চেয়ারে ভাড়া ৩২০ টাকার স্থলে হবে ৩৪৫ টাকা, এসি চেয়ার ৬১০ টাকার স্থলে ৬৫৬ টাকা, এসি সিট ৭৩১ টাকার স্থলে ৭৮৮ ও এসি বার্থে ১ হাজার ৯৩ টাকার স্থলে ১ হাজার ১৮৯ টাকা। ঢাকা-খুলনা রুটে শোভন শ্রেণির ভাড়া ৩৯০ থেকে বেড়ে হবে ৪২০ টাকা, শোভন চেয়ার ৪৬৫ থেকে ৫০৫, এসি চেয়ার ৮৯১ থেকে ৯৬১, এসি সিট ১ হাজার ৭০ থেকে ১ হাজার ১৫৬ ও এসি বার্থের ভাড়া ১ হাজার ৫৯৯ থেকে বেড়ে হচ্ছে ১ হাজার ৭৩১ টাকা। ঢাকা-সিলেট রুটে শোভন শ্রেণির ভাড়া হবে ২৬৫ টাকা, শোভন চেয়ার ৩২০, এসি চেয়ার ৬১০, এসি সিট ৭৩৬ ও এসি বার্থে ১ হাজার ৯৯ টাকা। ঢাকা-রাজশাহী রুটে উল্লিখিত শ্রেণিগুলোর ভাড়া হবে যথাক্রমে ২৮৫, ৩৪০, ৬৫৬, ৭৮২ ও ১ হাজার ৬৮ টাকা। এ ছাড়া রেলওয়ের প্রতিটি শ্রেণিতে ন্যূনতম ভাড়া ৫ থেকে ১০ টাকা হারে বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া পণ্য ও কনটেইনার পরিবহনে ভাড়া বাড়ছে ৭ থেকে ৯ শতাংশ।

সর্বশেষ খবর