সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভাষার বিকৃতি চাই না : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ বিভিন্ন ভাষা শিখুক, বিভিন্ন ভাষার ব্যবহার হোক, সেটা চাই। কিন্তু ভাষার বিকৃতি হোক, সেটা চাই না। অনেকের বাংলা-ইংরেজি মিশিয়ে বাংলাকে বিকৃত করে ইংরেজি ধাঁচের কথা বলার একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এটা বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। গতকাল বিকালে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবী আজ গ্লোবাল ভিলেজ। বাংলা ভাষাকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। কিন্তু যখন দেখি অনেকের কাছে বাংলা ভাষা ভুলে যাওয়াটা যেন বিরাট কাজ, তখন কষ্ট হয়। যেন বাংলা ভুলে গেলেই গুণের কাজ! একটা শ্রেণি তৈরি হয়েছে, ছেলে-মেয়েদের ইংরেজি মিডিয়ামে না পড়ালে যেন তাদের ইজ্জতই থাকে না। অথচ ইংরেজি মিডিয়াম থেকে কয়টা ফল করে? তিনি বলেন, আসুন ভাষার ব্যবহার ও চর্চা বিস্তৃত করি। মাতৃভাষাকে ভালোবাসি, আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলব, মাকে মা বলে ডাকব। সেজন্য ভাষার অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে। বিভিন্ন দেশের ভাষা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা করা দরকার। এটা হলে ভবিষ্যত্ প্রজন্ম বিপথে যাবে না। অনেকে জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে যাচ্ছে। মাদকাসক্ত হচ্ছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে সংস্কৃতির চর্চা বাড়াতে হবে, বেশি করে খেলাধুলা করতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান অনুষ্ঠানে ‘২১ শে ফেব্রুয়ারি বাঙালি মননের বাতিঘর’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ইউনেস্কোর ঢাকা অফিসের প্রধান বিয়াট্রিস কালডুন শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন। তিনি এ সময় ইউনেস্কোর মহাপরিচালক মিজ ইরিনা বুকোভার শুভেচ্ছা বাণী পড়ে শোনান। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জিনাত ইমতিয়াজ আলী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটকে ক্যাটাগরি দুইয়ে উন্নীত করায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৪৭-এর পর থেকে বাঙালির ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্যের ওপর বারবার আঘাত করেছে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী। তারা আমাদের জাতি ধ্বংস করতে ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত করেছে। কী দুর্ভাগ্য আমাদের বাঙালি জাতির, এ জাতির কিছু সন্তান ছিলও যারা তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। তিনি বলেন, কোনো অর্জনই হঠাত্ করে আসে না। এক লক্ষ্য থাকতে হয়। নেতৃত্ব দিতে হয়। সেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আমাদের জাতির পিতা। আমাদের প্রতিটি অর্জন অনেক ত্যাগের বিনিময়ে পেতে হয়েছে। আজকে আমরা যা পেয়েছি, জাতির পিতার জন্য পেয়েছি। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের সচিব, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কূটনৈতিক মিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর