শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাউন্সিল নিয়ে ব্যস্ত দুই দল

ধীরে চল নীতিতে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

কাউন্সিল নিয়ে ব্যস্ত দুই দল

সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে ধীরে চল নীতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আগামী ২৮ মার্চ পূর্বঘোষিত কাউন্সিল পেছানো নিয়ে দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকায় এখনো পরিষ্কার হয়নি, সম্মেলন কত দিন পেছানো হবে, কখন হবে। দলের একটি অংশ চায় যথা সময়েই দলের সম্মেলন হোক। আরেকটি অংশ চায়, কিছুদিন পেছানো হোক। তবে সব কিছু চূড়ান্ত করতে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকা হবে। দলীয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্রমতে, গত ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দলের সর্বশেষ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আগামী ২৮ মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের ২০তম কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। সে অনুযায়ী সম্মেলন প্রস্তুতি বিষয়ক বিভিন্ন উপকমিটি গঠনও করা হয়। কিছু উপকমিটি কাজও শুরু করেছেন। এর মধ্যে ছয় দফায় দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম ধাপে নির্বাচন শুরু হবে ২২ মার্চ। আর দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ৩১ মার্চ। এ ছাড়া ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ দিবস, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। এসব কর্মসূচি গুরুত্বসহকারে পালন করে আওয়ামী লীগ। ইউপি নির্বাচন ও মার্চের কর্মসূচি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল ব্যস্ত থাকায় সম্মেলনের তারিখ পেছানোর পক্ষে মত দিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। তারা চান, আগামী এপ্রিলের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে সম্মেলন করতে। তবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে সম্মেলন করতে না পারলে সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে সম্মেলন করা হতে পারে বলে দলের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন। তিন বছর মেয়াদি কমিটির মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর। গত ৯ জানুয়ারি দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তিন মাস বৃদ্ধি করে তা ছয় মাস বৃদ্ধি করা হয়। জুনে এ মেয়াদ শেষ হবে। জুনের মধ্যে সম্মেলন না করা গেলে বর্তমান কমিটির মেয়াদ আরও বাড়ানোর প্রয়োজন হবে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কারণে দলের কাউন্সিল পিছিয়ে যাচ্ছে। নতুন তারিখ নির্ধারণ করতে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকা হবে। দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সম্মেলনের সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের ছিল। কিন্তু ৬ ধাপে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠানের কারণে সারা দেশ থেকে যেসব প্রতিনিধি আসবেন, তাদের অনেকেই প্রার্থী বা নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকবেন। তাই সম্মেলন পিছিয়ে জুনের পর করার কথাভাবা হচ্ছে। সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, মাত্র বিশ দিনের ঘোষণাতেই আওয়ামী লীগ সম্মেলন করার মতো ক্ষমতা রাখে। কাজেই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কারণে পিছিয়ে দিতে হবে এমনটা ভাবা ঠিক না। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলের কার্যনির্বাহী সংসদ। দলটির নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়। কারণ উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম প্রাচীন এ রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড সারা দেশে এক ধরনের উত্সবের আবহ তৈরি করে। অন্যদিকে এই সম্মেলন উপলক্ষে দেশি-বিদেশি বহু অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়ে থাকে। সূত্রমতে, সম্মেলন উপলক্ষে ১০টি প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে। এর মধ্যে সাজসজ্জা উপকমিটির দুটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সম্মেলনের মঞ্চ প্রস্তুতের ক্ষেত্রে ঐতিহ্য ও প্রযুক্তিকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। এবারের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আকার ৭৩ থেকে বাড়িয়ে ৮১ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

গঠনতন্ত্র সংশোধন উপকমিটি এখনো কাজ শুরু করেনি। যে কারণে সম্মেলন নিয়ে কিছুটা ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ।

সর্বশেষ খবর