শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

পিপিপিতে গুরুত্ব প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা দ্রুত বাংলাদেশকে উন্নত করতে চাই। শুধু সরকার এটা করতে পারবে না। এ জন্য আমাদের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ দরকার। উদাহরণ হিসেবে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অবদানের কথা তুলে ধরেন। পিপিপি ধারণাকে মাথায় রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন তিনি। গতকাল দুপুরে তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে চামেলী হলরুমে পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রথম বোর্ড অব গভর্নরসের সভায় প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশনা দেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে বিগত কয়েক বছরে সরকারি পিপিপি কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা হয়। কার্যক্ষমতা ভাগ ও সাংগঠনিক কাঠামো, অংশীদার নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় জানানো হয়, পিপিপি পাইপলাইনে বিভিন্ন খাতের ৪৩টি প্রকল্প রয়েছে। যার বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আসবে। সভায় আরও জানান হয়, ৬ প্রকল্পের চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পিপিপি কারিগরি তহবিলের ৭৭ কোটি টাকা ব্যয় করে ১৮টি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে যেখানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে। ১১টি প্রকল্পে বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে যেখানে সম্ভাব্য বিনিয়োগ আসবে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়াও ১০টি প্রকল্প সম্ভাব্যতা সমীক্ষা যাচাই পর্যায়ে রয়েছে যেখানে সম্ভাব্য বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

পিপিপি বোর্ড অব গভর্নরসের চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের উন্নয়নে রাশিয়া সহযোগিতা করবে : বাংলাদেশের উন্নয়নে রাশিয়া যে কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেকসান্দর এ নিকোলায়েভ। তিনি গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারকরণে আন্তঃরাষ্ট্রীয় কমিশন গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সাক্ষাতের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। 

বাংলাদেশে বিগত চার বছর দায়িত্ব পালনকালীন সহযোগিতার জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ সময়ে বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, সেই সফরের ফলে বাংলাদেশ-রাশিয়ার সম্পর্কের ভিত আরও মজবুত হয়েছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে রাশিয়ার ভূমিকা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে সব সময়ই প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেয়ে আসছি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার মাধ্যমে এই সৌহার্দ্যের বন্ধনকে আমরা এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর