বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

বেড়েই চলেছে সহিংসতা উত্তপ্ত বাউফল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সংঘাত-সহিংসতা ততই বেড়ে চলছে। এ নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক-উত্কণ্ঠা বিরাজ করছে। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর চাচাতো ভাই নিহত হয়েছেন। এই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে বাউফল উপজেলা। এ ছাড়া গতকাল শেরপুরের নালিতাবাড়ী, কুমিল্লার দেবিদ্বার ও খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় অর্ধশত কমি-সমর্থক আহত হয়েছেন।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে (বিদ্রোহী) স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর উল্লার সমর্থকদের হামলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সামসুল হক ফকিরের চাচাতো ভাই আশ্রাফ ফকির (৪৫) নিহত হয়েছেন। গতকাল এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করে পুলিশ। নিহত ও দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগ মনোনীত ও দলের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী একে অপরকে দায়ী করেছেন। নিহত আশ্রাফ আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। এ ছাড়া গতকাল সূর্যমণি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বাচ্চুর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর হয়েছে। আওয়ামী  লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা নুরাইনপুর বাজারে নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

ক্ষোভে উত্তাল বাউফল : স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আশরাফ হত্যার প্রতিবাদে গতকাল সকালে আদাবাড়িয়ার মিলঘর এলাকায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দুপুর ১২টায় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আশরাফ ফকিরের খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বের হওয়া ওই মিছিল পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে মিছিলটি বাউফল থানার সামনে এসে সড়ক অবরোধ করে। কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে বাউফল থানার ওসি আজমো মাসুদুজ্জামানের অপসারণের দাবিতে সাড়ে ১২টা থেকে প্রায় ৩টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা।

কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বড়শালঘর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলাম ঝারু এবং দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনুছ মাস্টারের (আনারস) কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ এবং বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত সোমবার রাতে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনুস মাস্টারের একটি মিছিল বের হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহিরুল ইসলামের কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে জহিরুল ইসলামের সমর্থকরা সংচাইল গ্রামে বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনুসের একটি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। এদিকে রাতেই পুলিশ উভয় প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ভোর রাত পর্যন্ত থানায় সমঝোতা বৈঠক করলেও সকাল থেকেই উভয় গ্রুপ আবারো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদক খুলনা জানান, মসজিদের দোকানঘরে নির্বাচনী কার্যালয় চালুকে কেন্দ্র করে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশের একজন কনস্টেবলসহ দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর অফিস কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।

নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি জানান, শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় চারজন আহত হয়েছে। অপরদিকে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচারে বাধা দেওয়া ও মারধরের ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর