শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

মেগা প্রকল্পের জন্য মহাপরিকল্পনা

বাজেটে বরাদ্দ হতে পারে ৫০ হাজার কোটি টাকা

মানিক মুনতাসির

২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে মেগা প্রকল্পের জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়ে আসছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর এ খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। প্রথম দিকে এ ক্যাপিটাল প্রোগ্রামের আওতায় ১৫টির মতো প্রকল্প থাকতে পারে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি তার দফতরে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, এখন থেকে সরকারের বড় বড় প্রকল্প নিয়ে একটি আলাদা বাজেট করা হবে। আর তা হবে আগামী বাজেটেরও নতুন এবং বিশেষ দিক। তিনি আরও বলেন, কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। আরও কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। সেগুলোর প্রাক-প্রাথমিক পর্যালোচনাও শুরু হয়েছে। আর এর জন্য আলাদা ক্যাপিটাল প্রোগ্রাম রাখা হবে। যাকে ক্যাপিটাল বাজেট বা মেগা প্রকল্প বাজেট বলা হবে। এ খাতে আসন্ন বাজেটে ৫ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে বলে জানান তিনি। অবশ্য এসব প্রকল্প একটি অর্থবছরেই শেষ হবে তা-ও নয়, এগুলোর কাজ দুই, তিন বা পাঁচ বছর বা তারও অধিক সময় পর্যন্তও চলতে পারে।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, বড় ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার যেন আর্থিক সংকটে না পড়ে সে ব্যবস্থা থাকবে বাজেটেই। কোথা থেকে টাকা আসবে, কীভাবে আসবে, ব্যয় করা হবে কোন পন্থায়, কোন প্রকল্পে কত টাকা লাগবে— তার পথনকশা থাকবে, বিস্তারিত বিবরণ বাজেটে বলে দেওয়া হবে। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রোরেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কক্সবাজারে সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পকে ইতিমধ্যে মেগা প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি নতুন প্রকল্পকে এর আওতায় আনা হবে। সব মিলিয়ে আগামী বাজেটে মেগা প্রকল্প (ক্যাপিটাল প্রোগ্রাম) বাজেটের আওতায় ১৫টি প্রকল্প থাকতে পারে বলে জানিয়েছে অর্থ বিভাগ। সূত্র জানায়, অবকাঠামোর উন্নয়ন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যার স্থায়ী সমাধান, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাই হবে ক্যাপিটাল প্রোগ্রাম বা মেগা প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যেই মধ্য আয়ের দেশ গড়ার লক্ষ্য আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করে সরকার। এদিকে দেশের অবকাঠামোর উন্নয়নে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে ১৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব প্রকল্পকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় প্রয়োজনীয় ভূমি দ্রুত অধিগ্রহণ, কোনো ধরনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি না করা, অহেতুক সময় ক্ষেপণ হয় এ ধরনের জটিলতা এড়িয়ে চলা, পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন পদ্ধতি কী হবে তা মাথায় রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রতি মাসেই এসব প্রকল্পের পৃথক পৃথক অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসব প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনাবিষয়ক এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর