শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

টেকনাফে মাদকদ্রব্য অফিস থেকে দুই কোটি টাকার ইয়াবা উধাও

কক্সবাজার প্রতিনিধি

টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কার্যালয় থেকে প্রায় দুই লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উধাও হয়ে যাওয়ার পর ১১ দিনেও এর কোনো হদিস মেলেনি। এমনকি কীভাবে এই উধাওয়ের ঘটনা ঘটল— এ সম্পর্কে কোনো ক্লুও পাওয়া যায়নি। যদিও কর্তৃপক্ষ দাবি করছে,  এসব ইয়াবা চুরি হয়েছে। এ ব্যাপারে গত বুধবার অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কার্যালয়ের ইনচার্জ তপন কান্তি শর্মা বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। এজাহারে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জব্দকৃত ১ লাখ ৮১ হাজার ৯১৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও আড়াই কেজি গাঁজা কার্যালয় থেকে তালা ভেঙে চোরেরা চুরি করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাদী বলেন, ‘আমি টেকনাফসহ অনেক জায়গায় দায়িত্ব পালন করেছি। কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। চোরেরা দরজার তালা ভেঙে কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে আলমারির তালা ভেঙে বিভিন্ন সময়ে জব্দকৃত মামলার আলামতের এক লাখ ৮১ হাজার ৯১৩ পিস ইয়াবা ও আড়াই কেজি গাঁজা চুরি করেছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৫ কোটি ৪৫ লাখ ৭৩ হাজার ৯০০ টাকা।’ অন্যদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, এর আগে উপজেলা পরিষদের প্রাণকেন্দ্রে এ ধরনের কোনো চুরির ঘটনা ঘটেনি। কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের অবহেলায় চুরির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। এ অবস্থায় অনেকের প্রশ্ন— এত বড় সরকারি কার্যলয় থেকে এতগুলো মাদক উধাও হয়ে গেলেও কোনো ক্লু বের করতে পারছে না কেন কর্তৃপক্ষ? শুধু একটি মামলা দায়ের করে দায় শেষ করা হচ্ছে কিনা— সে বিষয়েও প্রশ্ন তাদের। টেকনাফ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন জানান, পৌনে দুই লক্ষাধিক ইয়াবা ট্যাবলেট চুরির ঘটনা ঘটেছে। এগুলো উদ্ধারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাতভর বিভিন্ন জায়গায় অভিযানও চালিয়েছেন। তবে চুরি হওয়া ইয়াবা ও গাঁজার সন্ধান মেলেনি। তিনি দাবি করেন, শিগগিরই দোষী ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। জানা গেছে, ঘটনা জানার পর গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম টেকনাফ মাদকদ্রব্য কার্যালয় এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে টিমের কেউ সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। এই টিমের সঙ্গে চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম সিকদার ও কক্সবাজার জেলা মাদকদ্রব্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সুবোধ কুমার বিশ্বাসও ছিলেন। একপর্যায়ে সুবোধ কুমার বিশ্বাস জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। উচ্চপর্যায়ের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কয়েক দিনের মধ্যে ঘটনার তদন্ত করে তারা একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন। এ ছাড়া টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল মজিদ বলেন, মাদকদ্রব্য কার্যালয় থেকে চুরি হওয়া ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজা এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর