রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাহুবলে নিখোঁজের পর সন্ধান চার শিশুর

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

বাহুবলে নিখোঁজের পর সন্ধান চার শিশুর

বাহুবলে নিখোঁজ চার শিশুর সন্ধান মিলেছে। হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জয় দেব ভদ্র বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন. শিশুরা নিরাপদেই আছে। ধারণা করা হচ্ছে লেখাপড়ার ভয়েই তারা মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে ছিল। এ ব্যাপারে গতকাল বিকালে থানায় জিডিও করেছিলেন এক শিশুর পিতা। এর আগে বাহুবলে চার শিশু হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুতাংবাজার এলাকার বাছিরগঞ্জ পূর্ব নোয়াগাঁও হাজী সুরুজ আলী সুন্নিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র বাহুবল উপজেলার পশ্চিম শাহাপুর চারগাঁও গ্রামের আহমদ রশিদ মনুর ছেলে তানভীর রশিদ রাফি (১৩), তার ভাগ্নে একই উপজেলার আব্দানারায়ণ গ্রামের আবদুল আহাদের ছেলে ইমতিয়াজ আহমেদ (১২), শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার দরিয়াপুর গ্রামের আবদুল আওয়ালের ছেলে সুহানুর রহমান (১১) ও নবীগঞ্জ উপজেলার সুজাপুর গ্রামের আবদুল্লাহর ছেলে আজহারুল ইসলাম নয়ন (১২) গত শুক্রবার বিকালে পাঞ্জাবি তৈরি করার কথা বলে মাদ্রাসা থেকে শায়েস্তাগঞ্জ আসে। তারা ফিরে না যাওয়ায় রাতে মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মোজাক্কির হোসাইন মোবাইল ফোনে ছাত্রদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানান। ওই রাতেই প্রত্যেক অভিভাবক সম্ভাব্য সব স্থানে শিশুদের খোঁজ করেন। সন্ধান না পেয়ে গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নিখোঁজ শিশু রাফির পিতা বাহুবল উপজেলা খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক আহমদ রশিদ মনু শায়েস্তাগঞ্জ থানায় জিডি করেন। এর আগেই শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি ইয়াছিনুল হকের নেতৃত্বে পুলিশ ও শ্রীমঙ্গল র‌্যাব-৯ ক্যাম্পের একটি টিম মাদ্রাসায় যান। শিশু নিখোঁজের ঘটনা জানতে পেরে সেখানে শত শত লোক ভিড় জমান। হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেবকুমার ভদ্র ও সহকারী পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান মনিরও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অভিভাবক আহমদ রশিদ মনু বলেন, ‘আমার ছেলে রাফি, ভাগ্নে ইমতিয়াজ ও তাদের সহপাঠী সুহানুর, নয়নসহ বেশ কিছু শিশু ওই মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে থেকে তারা হাফিজি পড়ছে। গত মঙ্গলবার রাফি বাড়ি এসেছিল। ওই দিনই বিকালবেলা আবার চলে যায়। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমার ভগ্নিপতি আবদুল আহাদকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। এরপর আমরা সর্বত্র তাদের খোঁজাখুঁজি করি। অবশেষে আমি শনিবার বিকালে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় জিডি (নম্বর ৪২৫) দায়ের করেছি।’ সুহানুর রহমানের পিতা আবদুল আওয়াল জানান, তিনি শুক্রবার বিকালে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় গেলে তার ছেলেসহ চার শিশুকে দেখতে পান। তিনি সুহানুরকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় পাঞ্জাবি কিনতে এখানে এসেছে। আবার মাদ্রাসায় চলে যাবে। পরে তিনি খবর পান তারা আর মাদ্রাসায় যায়নি। এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি ইয়াছিনুল হক বলেন, ‘জিডি হয়েছে। আমরা শিশুদের সন্ধানে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ সেলিম আহমদ জানান, মাদ্রাসাটি ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর আগেও শিশুরা মাদ্রাসা ছেড়ে চলে গেলে দু-এক দিনের মধ্যে আবার চলে এসেছে। নিখোঁজ শিশুদের মধ্যে ইমতিয়াজ ১৭, রাফি ৮, সুহানুর ১৮ ও আজহারুল কোরআন শরিফের ১১ পারা মুখস্থ করেছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি চার শিশু নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিন পর তাদের মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর