শিরোনাম
শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

জেলায় পৌঁছেছে ব্যালট, কাল নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জেলায় পৌঁছেছে ব্যালট, কাল নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

নির্বাচন কমিশন থেকে গতকাল শুরু হয়েছে জেলায় জেলায় ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানোর কাজ। ভোটের আগের দিন কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে এসব সামগ্রী। —বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য জেলায় জেলায় ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য মালামাল পাঠানো হয়েছে। ভোটের আগের দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পৌঁছে দেওয়া হবে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আগামীকাল নির্বাচনী এলাকায় নামবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আগামী ২২ মার্চ প্রথম ধাপের ৭৩২ ইউনিয়নে ভোট হচ্ছে। গতকাল সকালে রাজধানীর পাঁচটি প্রেস থেকে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ৩৬ জেলায় ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব রকিব উদ্দিন মণ্ডল জানিয়েছেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রতিনিধিরা ব্যালট পেপার গ্রহণ করেছেন বলে তিনি জানান।

এদিকে, প্রথম ধাপের ভোটের জন্য প্রায় চার কোটি ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। এ ধাপে তিনটি পদে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি ভোটারের বিপরীতে তিনগুণ সংখ্যক ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। ২২ মার্চ ৭৩২ ইউপিতে ভোট হবে। ব্যালট পেপার মুদ্রণ ও বিতরণের তদারকিতে থাকা নির্বাচন কমিশনের উপসচিব রকিব উদ্দিন মণ্ডল জানান, প্রথম ধাপের চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদের ব্যালট পেপার মুদ্রণ শেষ হয়েছে। গতকাল বিতরণও হয়েছে। ছয় ধাপের সোয়া চার হাজার ইউপির প্রায় আট কোটি ভোটারের জন্য তিনটি পদের বিপরীতে প্রায় ২৪ কোটি ব্যালট ছাপানো হবে। ইসির কর্মকর্তারা জানান,  বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত পদগুলো বাদে বাকি পদের ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে একটি ইউপিতে। প্রথম ধাপে ইতিমধ্যে ৬২ জন চেয়ারম্যান, ১৭৯ জন সাধারণ সদস্য ও ৫৪ জন সংরক্ষিত সদস্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথম ধাপে ৩ হাজার ৩৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, সাধারণ সদস্য পদে ২৫ হাজার ৮৪৭ জন ও সংরক্ষিত পদে ৭ হাজার ৫৭৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন।

চিতলমারীর ইউএনও প্রত্যাহার : ইউপি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে বাগেরহাটের চিতলমারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফরিদ হোসেনকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসির উপসচিব সামশুল আলম বলেন, ফরিদ হোসেনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব, অবৈধ নির্দেশ দেওয়া, দুর্ব্যবহার ও হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল তাকে সরিয়ে উপযুক্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে উপসচিব জানান। চিতলমারী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ওই প্রার্থীদের পক্ষ নিয়ে ইউএনও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ‘হুমকি ও অবৈধ নির্দেশ’ দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার কমিশনে অভিযোগ করেন, ইউএনও ফরিদের চাপে তাদের সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এসব অভিযোগ তদন্তের জন্য ইসি একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে উপসচিব জানান।

আজ থেকে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ : প্রথম ধাপে দেশের ইউপি ভোট উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় আজ থেকে মোটরসাইকেল চালনোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এসব নির্বাচনী এলাকায় মোটর সাইকেল চালানোর ওপর এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে মঙ্গলবার মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত। ইসি জানিয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে কতিপয় যান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এবারও তাই করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী তিন দিন আগে থেকে ভোটের দিন মধ্য রাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রাখতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইসির উপ-সচিব সামসুল আলম স্বাক্ষরিত সড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সচিব বরাবর পাঠানো নির্দেশনা থেকে জানা যায়, ভোটের দিনের পূর্ববর্তী রাত ১২টা থেকে গ্রহণের দিন মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত বেবী টেক্সি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো প্রভৃতি যানবাহন চলাচলে নিষেজ্ঞা আরোপ করতে বলা হয়েছে।

 

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিল থাকবে। তা ছাড়া নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি/বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কিছু জরুরি কাজ যেমন- অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কাজে ব্যবহারের জন্য উল্লেখিত যানবাহনের চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। এ ছাড়াও নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জাতীয় মহাসড়ক (হাইওয়ে), বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় যান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এ ছাড়া সড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সচিব বরাবর পাঠানো আরেকটি নির্দেশনায় নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ভোটের দিনের পূর্ববর্তী রাত ১২টা থেকে গ্রহণের দিন মধ্য রাত ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত সব ধরনের নৌযান ও স্পিড বোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বলা হয়েছে। তবে সেখানে সব ধরনের ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে শুধু লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ইঞ্জিনচালিত ছোট নৌযান বা জনগণ তথা ভোটারদের চলাচলের জন্য ক্ষুদ্র নৌযান চলাচল নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখতে বলা হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর